করিমগঞ্জ : আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদী সভা শিলচরে

বরাক তরঙ্গ, ৪ এপ্রিল : নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় কমিটি, আসাম এর কাছাড় জেলা সমিতির আহ্বানে শিলচরের গোলদীঘি মলের সামনে করিমগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে একটি প্রতিবাদী নাগরিক সভার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার আয়োজিত সভায় সংগঠনের কাছাড় জেলা সমিতির সম্পাদক মধুসূদন কর প্রতিবাদী নাগরিক সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন। এরপর করিমগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মঞ্চ স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিয্যমণ্ডিত করিমগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন প্রতিরোধ নাগরিক কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক অরুণাংশু ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, করিমগঞ্জ জেলার জনগণের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে গত বছরের নভেম্বর মাসে আসাম সরকার কেবিনেট বৈঠকে এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ এর আগে করিমগঞ্জ জেলার বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক, ছাত্র, যুব, মহিলা সংগঠনের সাথে আলোচনা করার যে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক রীতি ছিল তাকে পায়ে মাড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। করিমগঞ্জ জেলার নাম ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মাতৃভাষা আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে আছে। এই নাম পরিবর্তন জনগণের লাভের পরিবর্তে ক্ষতির কারণ হবে। তিনি বলেন বরাক উপত্যকা আজ আসাম সরকারের সীমাহীন বৈষম্যের শিকার। এর থেকে জনসাধারণের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি উক্তির ভূল ব্যখ্যা করে এই মহান ব্যক্তিকে অপমানিত করা হয়েছে। তিনি বরাক উপত্যকার আপামর গণতন্ত্র প্রিয় জনসাধারণকে করিমগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানোর জন্য আবেদন জানান।

করিমগঞ্জ : আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদী সভা শিলচরে

কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক সুনীতরঞ্জন দত্ত তীব্র ভাষায় নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। সিআরপিসিসি এর কো- চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থ তাঁর বক্তব্যে বলেন ব্রিটিশ শাসনকালে শ্রীহট্ট জেলার প্রথম মহকুমা ছিল করিমগঞ্জ। এই নামের সাথে জড়িয়ে আছে সাধারণ মানুষের আবেগ। কোনদিনই এর পরিবর্তনের সপক্ষে কেউ আওয়াজ তোলেন নি। আজ বিভাজনের লক্ষ্যে এই কাজ করা হয়েছে।

করিমগঞ্জ : আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদী সভা শিলচরে

শ্রমিক নেতা নির্মলকুমার দাস বলেন জনজীবনের সমস্যা সমাধানে চরম ব্যর্থ বর্তমান সরকার গোটা দেশে বিভাজনের খেলায় মেতেছে। নাম পরিবর্তন এরই অংশ মাত্র। শ্রমজীবী মানুষ যদি এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ায় তাহলে ভবিষ্যত আরও বিপন্ন হবে। অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের মৃণাল কান্তি সোম, ফোরাম ফর স্যোশাল হারমনির অরিন্দম দেব, ডাঃ এম শান্তিকুমার সিংহ, আদিমা মজুমদার, সীমান্ত ভট্টাচার্য, শ্যামদেও কুর্মী সহ অনেকেই এই নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। অধ্যাপক অজয় রায় নাগরিক সভার সঞ্চালনা করেন।

এ দিনের নাগরিক সভায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা হায়দার হোসেন চৌধুরী, মলয় ভট্টাচার্য, সঞ্জয় ভট্টাচার্য, ভবতোষ চক্রবর্তী, হানিফ আহমেদ বড়ভূইয়া, ইউনিস চৌধুরী, দুলালী গাঙ্গুলি, হিল্লোল ভট্টাচার্য, পার্থপ্রতিম ধর, সত্যজিৎ গুপ্ত, প্রবীর রায় চৌধুরী, নন্দদুলাল সাহা, খাদেজা লস্কর সহ বহু বিশিষ্ট জনেরা।

Author

Spread the News