লোডশেডিং বন্ধের দাবিতে স্মারকপত্র প্রদান ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের

বরাক তরঙ্গ, ২৩ আগস্ট : লোডশেডিং বন্ধের জোরালো দাবি জানিয়ে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছাড় জেলা কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর নিকট এপিডিসিএল এর জেনারেল ম্যানেজার মারফত একটি স্মারকপত্র প্রেরণ করা হয়। বুধবার প্রদান করা স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয় যে গত কয়েকদিন থেকে যে লোডশেডিং চলছে এতে কাছাড় জেলার জনগণ অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। অথচ এই যন্ত্রণা লাঘবের কোনো চেষ্টা সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে প্ররিলক্ষিত হচ্ছে না। ন্যাশনাল গ্রিডে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় এপিডিসিএল চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ যদি দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সত্যি কম হত তাহলে অন্যান্য রাজ্যে একই সমস্যা হচ্ছে না কেন? সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে
রাজ্য সরকার নিজেদের চাহিদা মেটানোর মতো নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকাঠামো রাজ্যে গড়ে তুলতে আগ্রহী নয়। খোলা বাজার অর্থাৎ ন্যাশনাল গ্রিড থেকে ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন উৎপাদন কোম্পানী থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে অবাধ দুর্নীতি হয় তা চালিয়ে যেতে রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল গ্রিড থেকে ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন উৎপাদন কোম্পানী থেকে প্রতি ইউনিট ১৪ টাকা দরে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে অথচ তা গ্রাহকদের কাছে ৭ টাকা প্রতি ইউনিট হিসেবে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরাসরি এই ৭ টাকার ঘাটতি মেটাতে অন্যান্য চার্জ সহ বিদ্যুতের মাশুল কিছু দিন পর পর বৃদ্ধি করছে। অথচ স্মার্ট মিটার প্রতিস্থাপনের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় না করে সেই টাকায় রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন বৃদ্ধি করলে আজ যে সংকটের সম্মুখীন রাজ্যবাসী হয়েছেন তা হত না।

স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় যে বিদ্যুৎ খন্ডের ব্যাক্তিগতকরণের লক্ষ্যে প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার চালুর পূর্বে রাজ্য সরকার ও এপিডিসিএল কৰ্তৃপক্ষ গ্রাহকদের বলেছিল যে টাকার অভাবে তারা সময়মতো বিদ্যুৎ ক্রয় করতে পারছে না, তাই প্রিপেইড ব্যবস্থা চালু করে অগ্রিম টাকা আদায় করে এই সমস্যার সমাধান করা হবে। অথচ তাদের যুক্তির বিপরীতে রাজ্যের শহরাঞ্চলে প্রিপেইড স্মার্ট মিটার ব্যবস্থা চালু হওয়া সত্ত্বেও লোডশেডিং এর যন্ত্রণায় জনগণ নাজেহাল হচ্ছেন।
প্ৰিপেড স্মাৰ্ট মিটার ব্যবস্থা চালুর আসল উদ্দেশ্য যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার মতো বিতরণ ব্যবস্থাকেও খোলা বাজারে ছেড়ে দিয়ে কর্পোরেটদের মুনাফা লুটার সুযোগ করে দেওয়া তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে দ্রুত এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। অন্যথায় শক্তিশালী গ্রাহক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ারী প্রদান করা হয়। স্মারকপত্র প্রদান কালে উপস্থিত ছিলেন মন্মথ নাথ, চাম্পালাল দাস, অঞ্জনকুমার চন্দ ও খাদেজা বেগম লস্কর প্রমুখ।

Author

Spread the News