ঘুমের ওষুধ খাইয়ে লুটপাট করে অল্টো নিয়ে পালালেও রেহাই মিলল না, গ্রেফতার তিন শ্রমিক
কেএইচ লস্কর, লক্ষীপুর।
বরাক তরঙ্গ, ৯ এপ্রিল : শ্রমিক সেজে এক বাড়িতে কাজ করতে এসে বাড়ি মালিকের ঘরের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সোনাগহনা, টাকা পয়সা সহ একটি অল্টো গাড়ি নিয়ে পালালেও শেষ রক্ষা হল না। সেল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে তিন চোরকে যোরহাট জেলার তিতাবর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে এল লক্ষীপুর পুলিশ। এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে গত ৩১ মার্চ।
লক্ষীপুর থানার অন্তর্গত লালাং ৪র্থ খণ্ড মরাগাঙ গ্রামে। গাড়ি মালিক রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি আগর কাঠের ব্যবসা করেন। কিছুদিন আগে হোজাই থেকে সাব্বির আহমেদ ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম তার বাড়িতে এসে বলে যে তারা খুব ভালো আগর তৈরীর কাজ করতে পারে। তাদের কথা শুনে তিনি তাদের শ্রমিক হিসেবে বাড়িতে রাখেন। তারা কাজও শুরু করে। ঈদের দু’দিন আগে সাব্বির তাকে বলে তার এক ছোট ভাই আছে এবং সে তার থেকেও ভালো আগরের কাজ করতে পারে। তার কথা শুনে তিনি তাকেও নিয়ে আসতে বলেন। পরেরদিনই এসে হাজির হয় ছোট ভাই সোয়েব আলম। ঈদের দিন রাতে খুশির মধ্য দিয়ে সাব্বির-য়ের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বাড়ির মালিক রিয়াজ উদ্দিনের পরিবারের সকল সদস্যদের পাকোড়া তৈরী করে খাওয়ায়। এই পকোড়া খেয়ে সবাই অচেতন অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে চেতনা ফিরে ঘুম থেকে উঠে দেখেন তাদের ঘরের আলমারি খোলা, টাকা-সোনার গহনা এবং তাদের এএস ওয়াই-৭০৮০ নম্বরের অল্টো (কে-টেন) গাড়িটি নেই। নেই তাদের কাজের শ্রমিক সাব্বির, আনোয়ারা এবং সোয়েব। তারা তাদের মোবাইলের সিম খুলে ফেলে দিয়ে অন্য সিম লাগায়। এবং হোয়াটস অ্যাপ কল করে বাড়ি মালিক রিয়াজ উদ্দিনকে বলে ৫০ হাজার টাকা দিলে তবে তার গাড়িটি ফেরত দেবে। রিয়াজ উদ্দিন সঙ্গে সঙ্গে লক্ষীপুর থানায় এসে সাব্বির, আনোয়ারা ও সোয়েবের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি ৪৩/২০২৫ এবং ৩০৫(বি) এবং ৩৫ বিএনএস-ধারায় নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত শুরু করে এসআই লক্ষ্যজিৎ দাস তাদের ফোন লোকেশন ট্র্যাক করে হদিস বের করেন। সঙ্গে সঙ্গে তিতাবর থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এদেরকে পাকড়াও করতে সমর্থ হয়। মঙ্গলবার এক মহিলা সহ ধৃত তিন গাড়িচোরকে লক্ষীপুরে নিয়ে আসেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। উল্লেখ্য, এর আগেও সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আত্মসাত সহ চুরির অপরাধে জেল খেটেছে অপরাধীরা। বুধবার লক্ষীপুর পুলিশ তাদের আদালতে সোপর্দ করেছে। ধৃত মহিলা সহ তিনজনই আন্তরাজ্য গাড়ি চোর চক্রের সদস্য বলে ধারণা পুলিশের।