শিলচর-চন্দ্রনাথপুর দ্বিতীয় রেল পথ তৈরির দাবিতে নাগরিক সমাবেশ শিলচরে
বরাক তরঙ্গ, ১৫ ফেব্রুয়ারি : শিলচর- চন্দ্রনাথপুর দ্বিতীয় রেল পথ তৈরির দাবিতে শিলচরের গান্ধী ভবনে অনুষ্ঠিত হয় নাগরিক সমাবেশ। শনিবার শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির আহ্বানে অনুষ্ঠিত হয় নাগরিক সভা।শিলচরের প্রবীণ নাগরিক বিশিষ্ট সমাজকর্মী হরিদাস দত্ত, হাইলাকান্দির প্রাক্তন শিক্ষক আলতাফ হোসেন লস্কর, করিমগঞ্জ জেলার প্রতিনিধি বদরপুরের বিশিষ্ট সমাজকর্মী মইনুল হক দের নিয়ে গঠিত সভাপতি মণ্ডলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশের শুরুতে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক অধ্যাপক অজয় রায়। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছর লাগাতার বরাক উপত্যকার জনগণকে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি ব্রডগেজ সম্প্রসারনের দাবি আদায় করেছিল।
আজ এই দাবি বাস্তবায়নের ফলে বরাক উপত্যকা সহ মিজোরাম, মণিপুর ও ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণ রাজধানী দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা, পড়াশোনা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি কাজে সহজেই যাতায়াত করতে পাচ্ছেন। কিন্তু ধ্বস প্রবণ পাহাড় লাইনে প্রতি বর্ষায় রেল পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। এই সমস্যার একমাত্র সমাধান চন্দ্রনাথপুর- লংকা দ্বিতীয় রেল পথ নির্মাণ। ২০১৬ সালেই এই গণদাবী উত্থাপন করা হয়েছিল হাইলাকান্দিতে অনুষ্ঠিত সংগ্রাম কমিটির অনুরূপ একটি গণ সমাবেশে। পরবর্তীতে বারবার এই গণদাবি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল রেল মন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে। কেন্দ্র সরকার যদিও গণদাবি মেনে এই লাইনের সার্ভের কাজ ২০২২ সালে হাতে নেয় কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এই গণদাবি নিয়ে আবারও জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার গ্রহণ করতেই আজকের এই গণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। গণ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে এই রেল লাইন তৈরির সমর্থনে জোরালো বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা রাজ্যের প্রতিনিধি মলিন দেববর্মা এবং মণিপুর রাজ্যের প্রতিনিধি এইচ জয় কুমার সিংহ।

সভায় মুল প্রস্তাব উত্থাপন করেন কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক করিমগঞ্জ জেলা থেকে আগত বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাংশু ভট্টাচার্য এবং আন্দোলনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন অন্যতম আহ্বায়ক হাইলাকান্দির বিশিষ্ট সমাজকর্মী সুশীল পাল। উভয় প্রস্তাবের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক নিরঞ্জন দত্ত, ইয়াসি’র সভাপতি সঞ্জীব রায়, বিশিষ্ট সমাজকর্মী সাধন পুরকায়স্থ, কবি-সাংবাদিক অতীন দাশ, হাইলাকান্দি জেলার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সম্পাদক সুদীপ পাল, বিশিষ্ট সমাজকর্মী নির্মল কুমার দাস, হিমাংশু শেখর পুরকায়স্থ, সাংবাদিক রাহুল দেব, করিমগঞ্জ জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী গোপাল পাল, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির হাইলাকান্দির জেলা সম্পাদক রঞ্জিত ঘোষ, হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিশিষ্ট সমাজকর্মী শিহাব উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ডাঃ এম শান্তি কুমার সিংহ, বিশিষ্ট সমাজকর্মী সীমান্ত ভট্টাচার্য, প্রাক্তন শিক্ষিকা বনানী রায় চৌধুরী, হাইলাকান্দির ড্রাগস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে আতলাফ হোসেন মজুমদার, চন্দ্রনাথপুর থেকে আগত মৌসুম দত্ত, সামছুল হক বড়ভূইয়া সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় যে চন্দ্রনাথ- লংকা দ্বিতীয় রেলপথের সার্ভে রিপোর্ট অবিলম্বে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং অনতিবিলম্বে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে।

এছাড়াও ডিমা হাসাও এর উপর দিয়ে যাওয়া রেলপথের ত্রুটি সারাই ও মেরামতির কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগামী বর্ষা মরশুমের পূর্বে শেষ করতে হবে। এবং হাইলাকান্দি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে গুয়াহাটি শহরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন কল্পে অতি দ্রুত ভৈরবী-হাইলাকান্দি হয়ে গুয়াহাটি পর্যন্ত দৈনিক অন্তত একটি এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করতে হবে।

