পুর সমস্যা নিয়ে জেলা আয়ুক্তকে স্মারকপত্র সমন্বয় মঞ্চের
বরাক তরঙ্গ, ২৩ সেপ্টেম্বর : কাছাড় জেলার নবনিযুক্ত জেলা আয়ুক্তের কাছে প্রগতিশীল নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ, শিলচর এর পক্ষ থেকে স্মারকপত্র প্রদান করে দাবি জানানো হয় যে পুর আধিকারিক কর্তৃক বেআইনিভাবে বর্দ্ধিত পুরকর অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
স্মারকপত্র প্রদানকালে মঞ্চের সভাপতি ধ্রুব কমার সাহা জেলা আয়ুক্তের নিকট পুর আইনের উল্লেখ করে বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত পুর বোর্ড ছাড়া অন্য কারো পৌরকর বৃদ্ধির ক্ষমতা নেই। নির্বাচিত শিলচর পুর বোর্ডের মেয়াদ ২০২০ এর এপ্রিল মাসে সমাপ্ত হওয়ার পর রাজ্যের অন্যান্য পুর বোর্ডের নির্বাচন ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হলেও শিলচর পুর বোর্ডকে নিগমে উন্নীত করার অজুহাত দেখিয়ে আটকে রাখা হয়। ফলে বিগত চার বছর থেকে শিলচরের নাগরিকরা পুর পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমতাবস্থায় যেখানে সরকারের উচিত ছিল দ্রুত পুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে জনগণকে উন্নত পৌর পরিষেবা প্রদান করা কিন্তু সরকার সে পথে না গিয়ে ঘোর পথে পৌর আধিকারিককে দিয়ে অন্যায়ভাবে জলকর সহ ২৭৮ ধরনের পুর কর বৃদ্ধি করা হয়।
স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় যে শিলচরের জমির মূল্য কোন কারণ ছাড়াই সিপিডাব্লিউডি এর মূল্য তালিকার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সিপিডাব্লিউডি জমির যে মূল্য ধার্য করেছে তা অতি উন্নত মানের শহরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অথচ শিলচরের মতো সমস্ত ধরনের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত ও কলকারখানাহীন একটি শহরের ক্ষেত্রে এই মূল্য নির্ধারণ সম্পূর্ণ বেমানান। অথচ এই মূল্য তালিকার উপর ভিত্তি করে জমি কেনা বেচা, ঘর নির্মাণ ইত্যাদির কর নির্ধারণ করা হয়েছে। যা শুধু অস্বাভাবিক নয়, সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ। এতে সাধারণ মানুষের জমি কেনা বেচার ক্ষেত্রে অহেতুক অত্যাধিক ট্যাক্স পরিশোধ করতে হচ্ছে।
স্মারকপত্রে আরও বলা হয় যে শিলচর শহরের নাগরিকরা বিগত কয়েক মাস ভাঙা রাস্তার জন্য নরক ভোগ করেছেন। পরবর্তীতে মঞ্চ সহ নাগরিকদের ধারাবাহিক আন্দোলনে সরকার সড়ক নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে। কিন্তু বর্তমানে যে ধরনের নিম্নমানের কাজ চলছে তাতে সবার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে যে এই সড়ক দুর্গাপূজার পর আবারও ভেঙে যাবে। সরকার বারবার এক রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্দ করবে না। মঞ্চের পক্ষ থেকে এই কথা বারবার এনএইচডিসিএল এর আধিকারিকদের বলা হলেও তারা এতে কর্ণপাত করছে না। মঞ্চের পক্ষ থেকে শিলচরের বন্যা ও জমাজলের সমস্যাও জেলা আয়ুক্তের নিকট তুলে ধরা হয়। তিনি সমস্ত বিষয় মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। স্মারকপত্র প্রদানকালে মঞ্চের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ মলয় দত্ত, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব রায়, অরিন্দম দেব প্রমুখ।