সারা অসম সরকারি স্কুল বাঁচাও কমিটি গঠিত, গুয়াহাটিতে অভিবর্তন
বরাক তরঙ্গ, ৯ নভেম্বর : গুয়াহাটিতে রাজ্য ভিত্তিক শিক্ষা অভিবৰ্তণে “সারা অসম সরকারি স্কুল বাঁচাও কমিটি” গঠিত হয়। এ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ছাত্ৰ সংগঠন এআইডিএসও’র উদ্যোগে গুয়াহাটির লক্ষীরাম বরুয়া ভবনে দুপুর ১২ টায় রাজ্য ভিত্তিক শিক্ষা অভিবৰ্তণ অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্য সরকার একত্ৰীকরণের নামে ইতিমধ্যে বন্ধ হওয়া ৯ হাজার সরকারি স্কুলের পূৰ্বের মৰ্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া এবং নতুন করে ১১,২৭২ টি বিদ্যালয় বন্ধের ষড়যন্ত্ৰ বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত অভিবৰ্তণে প্রচুর শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, লেখক, বুদ্ধিজীবিরা উপস্থিত হয় এবং শিক্ষার ব্যক্তিগতকরণ নীতির তীব্ৰ বিরোধীতা ও নিন্দা করে।
প্ৰজ্জোল দেব, পল্লৱ পেগু, হিল্লোল ভট্টাচাৰ্য ও জহিরুল ইসলামকে দিয়ে গঠিত সভাপতি মণ্ডলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত অভিবৰ্তণে উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে এআইডিএসও’র রাজ্য সম্পাদক হেমন্ত পেগু। প্ৰাক্তন শিক্ষামন্ত্ৰী অধ্যাপক রমণী বৰ্মন এবং গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ৰাক্তন অধ্যাপক ড০ মনমোহন দাসের লিখিত বক্তব্য পাঠের পর একে একে বক্তব্য রাখেন দুধনৈ কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক চন্দ্ৰলেখা দাস, গুয়াহাটি কমার্স কলেজের প্ৰাক্তন অধ্যক্ষ ড০ ঘনশ্যাম নাথ, সদৌ অসম প্ৰাথমিক শিক্ষক সন্মিলনীর সম্পাদক প্ৰধান রাতুল গোস্বামী, রূপহী কলেজের প্ৰাক্তন অধ্যাপক আব্দুস সবুর ও কাছাড় কলেজের প্ৰাক্তন অধ্যাপক ড০ অজয় রায় এবং সদৌ অসম উচ্চতর মাধ্যমিক শিক্ষক – কৰ্মচারী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জিতেন চন্দ্ৰ হাজরিকা।
বক্তারা অভিবর্তণে উত্থাপিত মূল প্ৰস্তাবের সমৰ্থনে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন সরকার পরিকল্পিতভাবেই মাতৃভাষা মাধ্যমের সরকারি স্কুলে ১ম শ্ৰেণী থেকে ৮ম শ্ৰেণী পর্যন্ত পাস-ফেল-ফেল ব্যবস্থা তুলে দেয়া ও প্ৰথম শ্ৰেণী থেকে গুরুত্ব দিয়ে ইংরাজি শিক্ষা না দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারি স্কুলের শিক্ষার মান অবনমিত করেছে। তাছাড়াও শিক্ষক ও পরিকাঠামোর অভাব এবং শিক্ষকদের অশৈক্ষিক কাজে ব্যস্ত রাখার ফলে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। ফলে সরকারি বিদ্যালয়ের উপর আস্থা হারিয়ে ন্যূনতম সামৰ্থ থাকা অভিভাবকরা সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ব্যক্তিগত মাধ্যমের স্কুলে ভৰ্তি করাচ্ছে। ফলে সরকারি স্কুলে ছাত্ৰছাত্ৰীর সংখ্যা হ্ৰাস পাচ্ছে এবং এই অজুহাতে সরকারি স্কুলসমূহ বন্ধ করে দিচ্ছে। বক্তারা সরকারি স্কুলে অবিলম্বে ১ম শ্ৰেণী থেকে ৮ম শ্ৰেণী পর্যন্ত পাস-ফেল প্ৰথা পুন প্ৰবৰ্তন ও মাতৃভাষা মাধ্যমের বিদ্যালয়ে প্ৰথম শ্ৰেণীর থেকে ইংরাজি গুরুত্ব দিয়ে শেখানোর ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সরকারি স্কুলের মান উন্নত করা এবং সরকারি স্কুল বন্ধের জনবিরোধী নীতি বাতিলের দাবি উত্থাপন করা হয়।
অভিবর্তণে অধ্যাপক রমণী বৰ্মন, অধ্যাপক মনমোহন দাস সহ ১৯ জনের উপদেষ্টামন্ডলী, ড০ ঘনশ্যাম নাথকে সভাপতি, ড° অজয় রায়, ড° নিৰ্মল সরকার, অধ্যাপক আব্দুস সবুর, অধ্যাপক প্ৰশান্ত বরদলৈ, বিশিষ্ট শিক্ষক সুরেন কলিতা, জ্যোতিষ সহরীয়া, উমেশ বরুয়া, বীরেন বরুয়াকে উপ-সভাপতি, পল্লব পেগু ও জহিরুল ইসলামকে যুগ্ম সম্পাদক, গৌর চন্দ্ৰ দাসকে কোষাধ্যক্ষ, কুশল পেগু ও শাহনাজ আহমেদকে সহ সম্পাদক মনোনীত করে ৬৭ সদস্যের “সারা অসম সরকারি স্কুল বাঁচাও কমিটি” শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়। নব নিৰ্বাচিত কমিটি সরকারি স্কুল রক্ষার দাবিতে ১৯-২৫ নভেম্বর পর্যন্ত গোটা রাজ্যে প্ৰতিবাদ সপ্তাহ পালনের কাৰ্যসূচী ঘোষণা করা হয়। তাছাড়া ১ ডিসেম্বর থেকে আঞ্চলিক ও জেলা ভিত্তিক অভিবৰ্তণ আয়োজনের প্ৰস্তাব গ্ৰহণ করে।