বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার বর্ষসেরা অনুষ্ঠান সম্পন্ন

বরাক তরঙ্গ, ২৬ নভেম্বর : বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা (বাকস)-র বর্ষসেরা অনুষ্ঠান শেষ হল। রবিবার শিলচরের হোটেল কল্পতরুর সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলার বিভিন্ন ক্রীড়াক্ষেত্রে পারদর্শিতার নজির রেখেছেন বা ভবিষ্যত উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে এমন খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক বক্তব্যে উপস্থিত বিশেষ অতিথি বিধায়ক করিম উদ্দিন বড়ভুইয়া বাকসের এধরনের অনুষ্ঠানের ভুয়সী প্রসংশা করে বাকসকে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্থাব রাখেন। অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি বিধায়ক দ্বীপায়ন চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ১০ কোটি টাকা শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দিয়েছেন। এই অর্থ দিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্ততঃ দুটি গ্যালারির কাজ যাতে শেষ হয়। কাজের সমাপ্তি বিধায়ক দ্বীপায়ন চক্রবর্তী তাঁর কার্যকালের মধ্যেই সমাপ্ত করতে চান। ইতিমধ্যে ডিএস এ-র জন্য আলাদা একটি ট্রান্সফর্মার প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তার আগে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার কাজের ভুয়সী প্রসংশা করেন। সংগঠনের জন্য সরকার থেকে জমি বরাদ্ধ করে সেখানে বাকসের একটি স্থায়ী কার্যালয় প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সভাপতি বাবুল হোড়, জেলা পরিষদের সিইও আর কে লস্কর, বাকসের উপদেষ্টা তৈমুর রাজা চৌধুরী‌, রুদ্রনারায়ন গুপ্ত, দৈনিক যুগশঙ্খের সঞ্চালক নীলাক্ষ চৌধুরী, সেপাক টাকরো সংস্থার সভাপতি আর কে সানাল  প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের ডিআইজি কঙ্গকন জ্যোতি শইকিয়া, শিলচর স্পোর্টিং ক্লাব সভাপতি অনুপ রায়, সমাজকর্মী গৌতম গুপ্ত, বর্ষীয়ান সাংবাদিক বিকাশ চক্রবর্তী প্রমুখ। অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে এবং স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন আয়োজক বাকসের কাছাড় জেলা কমিটির সচিব অভিজিৎ ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিলচর তরুণ ক্লাবের তরুণীরা। অবশ্য তারা অনুষ্ঠানের মাঝেও গান গেয়ে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের মনোরঞ্জন দেন। এদিনের অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন অনির্বাণ জ্যোতি গুপ্ত। সবশেষে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন বাকসের কাছাড় জেলা সভাপতি দেবাশীষ সোম।

বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার বর্ষসেরা অনুষ্ঠান সম্পন্ন

এদিন বাকসের অনুষ্ঠানে সেরা সংগঠক হিসেবে ধলাই মাতৃভূমি ক্লাবের সভাপতি সিতাংশু দাসকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। তাছাড়া বাকসের তরফে দুই চিত্র সাংবাদিক যথাক্রমে সুদীপ সিং ও হিমাংশু দে-কে সম্মানিত করা হয়।
বাদবাকিদের মধ্যে এবারে কাছাড় বাকস থেকে পুরস্কৃতদের তালিকা নিম্নরূপ-

বাকসের স্থায়ী কার্যালয় প্রদানের প্রতিশ্রুতি বিধায়ক দ্বীপায়নের, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্থাব বিধায়ক করিমের

*বনীপ সিনহা*
শিলচরের তারকা শাটলার বনীপ সিনহা এবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছাপ রাখতে পেরেছেন। ২০২৩ সালের জুন মাসে মালয়েশিয়ার জোহর বাহরুর লারকিন ব্যাডমিন্টন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট অলিম্পিক
গেমসে তিনটি স্বর্ণপদক জেতেন তিনি। সিঙ্গলসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার
পাশাপাশি বদরপুরের আবু মহম্মদ ইউসুফকে নিয়ে এবং মিক্সড ডাবলসে মেরি নাভারোকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। অবশ্য আন্তর্জাতিক আসরে যাওয়ার
আগে পঞ্জাবের লাভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্টুডেন্ট
অলিম্পিকেও নিজের ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হন বনীপ। বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা বনীপর্কে বর্ষসেরা শাটলারের পুরস্কারে সম্মানিত করছে।

বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার বর্ষসেরা অনুষ্ঠান সম্পন্ন

*দিবিজা পাল*
শিলচরের উঠতি টেবিল টেনিস তারকা দিবিজা পাল বর্তমানে অনূর্ধ্ব ১১ বয়স গ্রুপে রাজ্যের এক নম্বর মহিলা প্যাডলার। বয়স এখনও নয় বছর সম্পূর্ণ হয়নি, কিন্তু এগারো, তেরো এবং ১৫ বছর বয়স গ্রুপে দাপিয়ে খেলছেন। দিব্যেন্দু পাল ও দীপশিখা পালের মেয়ে দিবিজা এ বছর ত্রিবান্দ্রমে জাতীয় রেঙ্কিং টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর জাতীয় রেঙ্কিং ৯। এ পর্যন্ত আসাম রাজ্য রেঙ্কিং টেবিল টেনিসের সাতটি আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দিবিজা। আন্তঃজেলা টুর্নামেন্টে রয়েছে দুটি খেতাব। এছাড়া আন্তঃজেলা অনূর্ধ্ব ১৫ বিভাগের একটি আসরে রানার্স আপ হয়েছেন।

বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা এবার বর্ষসেরা অনুষ্ঠানে দিবিজাকে সম্মান জানাতে পেরে গর্বিত।

*দেবিকা দেব*
অনূর্ধ্ব ১৫ আন্তঃজেলা মহিলা ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন শিলচর দলের সদস্য দেবিকা দেব। টপ অর্ডারে ব্যাট করেন তিনি। স্পিন বোলিংও করে থাকেন। কেরিয়ারে এ পর্যন্ত বল হাতেই বেশি সাফল্য পেয়েছেন। এ বছর রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে দেবিকা শিলচরের হয়ে সাতটি উইকেট পেয়েছেন। এছাড়া সিনিয়র আন্তঃজেলা ক্রিকেটে দুই ইনিংসে নিয়েছেন চার উইকেট। গত বছর রাজ্য অনূর্ধ্ব ১৫ দলের ট্রায়াল ক্যাম্প শেষে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি টুর্নামেন্টে পেয়েছেন চার ম্যাচে ১০ উইকেট। রাজ্য চ্যালেঞ্জার ট্রফি ট্রায়ালেও ছিলেন দেবিকা।
দেবিকাকে তার উল্লেখ্যযোগ্য পারফরম্যান্সের জন্য সম্মান জানাচ্ছে বরাক উপত্যকা সাংবাদিক সংস্থা।

*প্রমিলা দে*
শিলচরের উঠতি অ্যাথলিটদের মধ্যে প্রমিলা দে অন্যতম। এই মহিলা খেলোয়াড় জ্যাভেলিনে ইতিমধ্যে নিজের প্রতিভার ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ২০২২ সালের ৭ আগস্ট গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত জ্যাভেলিন ডে উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৬ বিভাগে সোনা জেতেন প্রমীলা। এ বছর এক‌ই আসরে তিনি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন ।

প্রমিলার আরও সাফল্য কামনা করছে ভরা বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা।

*বিপ্রজিৎ দেব*
বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও সাধারণ শ্রেণীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিপ্রজিৎ দেব। শিলচরের এই উঠতি প্যাডলারের একটি হাত জন্মগতভাবে নেই। তবে সেই প্রতিবন্ধকতা জয় করে তিনি অনূর্ধ্ব ১১ রাজ্য টেবিল টেনিস রেঙ্কিংয়ে এখন নয় নম্বরে উঠে এসেছেন। এবছর আমিতো জেলা টিটি প্রতিযোগিতায় শিলচরের ব্রোঞ্জ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন বিপ্রজিত দেব। সদ্য এগারোতে পা দেওয়া এই প্যাডলার স্টেট রেঙ্কিংয়ে নিজের বয়স গ্রুপে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছেন। এছাড়া অনূর্ধ্ব ১৩ গ্রুপে তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত খেলার নজির রয়েছে।
প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলা বিপ্রজিতকে উৎসাহ দিতে এবার বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করছে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা।

*বিপ্রজিত পাল*
আজকের বর্ষসেরা অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিত খেলোয়াড়দের মধ্যে বিপরীত পাল অন্যতম। বর্তমানে তিনি গুজরাটের বরোদায় জাতীয় রেঙ্কিং টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতার অনূর্ধ্ব ১১ বয়স গ্রুপে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। বিপ্রজিত এ পর্যন্ত একটি আন্তজেলা খেতাব দিয়েছেন। এছাড়া তিনটি রাজ্য রেঙ্কিং খেতাব‌ও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সব‌ সাফল্য এ বছর‌ই এসেছে। এছাড়া গোলাঘাটে অনুষ্ঠিত রেঙ্কিংয়ে তৃতীয় এবং লখিমপুরে চতুর্থ হয়েছেন তিনি। প্রবল সম্ভাবনাময় এই প্যাডলারকে সম্মান জানাতে পারে গর্ব বোধ করছে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা।

*মারিউস ডিখার*
রাজ্য অনুর্ধ ১৬ ক্রিকেট দলের স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকায় আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি উঠতে অলরাউন্ডার মারিউস ডিখার। সম্প্রতি আর জি বরুয়া ট্রফি অনূর্ধ্ব ১৬ আন্তঃজেলা ক্রিকেটের সেমিফাইনাল খেলেছে শিলচর। অথচ দলটি প্রথম রাউন্ডেই হেরে যাওয়ায আশঙ্কায় ছিল। লক্ষীপুরের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে হ্যাটট্রিক সহ ছয় উইকেট নেন ডিখার।ব্যাট হাতে করেন ৫৬ রান। গত বছর‌ও অনূর্ধ্ব ১৬ ক্রিকেটে ভাল খেলেছিলেন তিনি। শিলচরের ঘরোয়া লিগে গত মরশুমে সোনাই ক্রিকেট সংস্থার হয়ে খেলেছেন তিনি। মারিউসের মূল বাড়ি হাইলাকান্দি জেলার সরসপুরে হলেও পড়াশোনার সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে শিলচরে থাকছেন। প্রতিভাবান ক্রিকেটার হিসেবে এবার মারিউসকে সম্মান জানাচ্ছে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা।

*রাজদীপ দাস*
গতবছর জাতীয় স্কুল হকি প্রতিযোগিতায় আসাম দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন শিলচরের রাজদীপ দাস। আসরটি বসেছিল মধ্যপ্রদেশে। নন্দলাল দাসের ছেলে রাজদীপ খেলেন ফরোয়ার্ড পজিশনে। এই মরশুমে আন্তঃজেলা জুনিয়র হকি এবং আন্তঃজেলা স্কুল হকি প্রতিযোগিতায় শিলচরের প্রতিনিধিত্ব করেছেন রাজদীপ। তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা।

*এ প্রিয়া দেবী*
এ বছর চিনের হাংঝৌ শহরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে আসাম থেকে মাত্র ছয়জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই ছয় জনের একজন কাছাড়ের এ প্রিয়া দেবী। সেপাক টাকরোয় তিনি অংশগ্রহণ করেন। তবে পদক বন্ধনীতে জায়গা করে নিতে পারেননি। এরপর গোয়ায় অনুষ্ঠিত জাতীয় গেমসে অংশ নিয়ে অবশ্য ব্রোঞ্জ জিতেছেন। এর আগে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত কিংস কাপ সেপাক টাকরো প্রতিযোগিতাতেও সাফল্য পেয়েছেন এ প্রিয়া দেবী। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্যের জন্য এবার এ প্রিয়া দেবীকে সম্মান জানাচ্ছে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা। বর্তমানে তেজপুরে ট্রায়াল ক্যাম্পে ব্যস্ত থাকায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারলেন না তিনি।

*সোরাম রাহুল সিং*
দাবা জগতে শিলচরকে গর্বিত করেছেন সোরাম রাহুল সিং। তাঁর সাফল্যে একের পর এক পালক যোগ হচ্ছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সফল হওয়া এই দাবাড়ু এ বছরও দারুণ সময় কাটাচ্ছেন। আন্তঃজেলা দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়। এ বছর কাছাড় জেলা দলও প্রথমবারের মতো আন্তঃজেলা দাবায় টিম হিসেবে চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছে। এই দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে রয়েছেন সোরাম রাহুল সিং। বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা তাঁকে বর্ষসেরা দাবাড়ু হিসেবে সম্মানিত করতে পেরে আনন্দিত।

*সুদীপ্ত পাল*
বর্ষসেরা উদীয়মান দাবাড়ু হিসেবে এবার পুরস্কৃত হচ্ছেন সুদীপ্ত পাল। স্বপ্নের উত্থান খুদে সুদীপ্তর। তার বাবা গৌতম পাল জানালেন, মাত্র ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বরে দাবা খেলায় হাতে খড়ি হয় সুদীপ্তর। একটা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন। দিন পনেরোর মধ্যে সুরেশ-আবজা মেমোরিয়াল টুর্নামেন্টে অনূর্ধ্ব৭ ক্যাটেগরিতে তৃতীয় পুরস্কার পান। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে আন্তঃস্কুল দাবা এবং এপ্রিলে শান্তনু সিং মেমোরিয়াল দাবায় ভাল প্রদর্শন করেন। জুলাইয়ে রাজ্য দাবায় অংশ নিয়ে চতুর্থ স্থানে জায়গা করে নেন। কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল দাবা প্রতিযোগিতা। সেখানে সল্টলেকে অংশগ্রহণ করে জাতীয় স্তরে ৫৮ তম স্থানে শেষ করেন। কম সময়ে উন্নতি করায় সম্ভাবনাময় সুদীপ্তকে পুরস্কার তুলে দিতে পেরে বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা গর্ববোধ করছে।

*রাহুল সিং*
বর্তমানে রাজ্য সিনিয়র ক্রিকেট দলে বরাক উপত্যকার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে খেলছেন বাঁহাতি স্পিনার রাহুল সিং। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি জাতীয় টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেমিফাইনাল খেলা আসামের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। যদিও ওই আসরে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি, তবুও এবার কিন্তু অন্য আসরগুলিতে দারুণ ফর্মে রয়েছেন রাহুল। নুরুদ্দিন আহমদ ট্রফি সিনিয়র আন্তঃজেলা ক্রিকেটে ছয় ম্যাচে ২৫ উইকেট নেন তিনি। দল রানার্স হয়ে আসর শেষ করে। নিজের অফিস দল এজি অসমের হয়েও ভাল খেলেছেন রাহুল।

*বিশ্বজিৎ মিশ্র*
বেকিরপারের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মিশ্র এবার বাকস থেকে পুরস্কৃত হচ্ছেন। এবার সিনিয়র দল না যাওয়ায় আন্তঃজেলায় তাঁর পক্ষে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রো কবাডি লিগে খেলার জন্য হরিয়ানা স্টিলার্স এবং তেলেগু টাইটান্সের ওপেন ট্রায়ালে অংশ নেন। হরিয়ানা জুনিয়র দলে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হয়। হরিয়ানা স্টিলার্সের ট্রায়ালে দুই রাউন্ডে সাফল্য পান তিনি। তৃতীয় রাউন্ডে ছিটকে যেতে হয় তাঁকে। ২০২১ সালে গুয়াহাটিতে খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমসে রাজ্য দলে নির্বাচিত হলেও খেলা হয়নি বিশ্বজিতের। তবে আগামীতে বড় কিছুকরার আশায় রয়েছেন বিশ্বজিৎ মিশ্র।

*কুটন গড়*
মাহলা অ্যাথলিট কুটন গড় বেশ কয়েক বছর ধরে জেলা ও আন্তঃজেলা স্তরে সাফল্যের মধ্যে রয়েছেন। শিলচর ডিএসএ, টাউন ক্লাব সহ স্থানীয় বিভিন্ন ইভেন্টে তিনি সব সময় সাফল্যের মধ্যে থাকেন। আন্তজেলা অনূর্ধ্ব ২০ বয়স গ্রুপে পাঁচ হাজার মিটার এবং তিন হাজার মিটারে ব্রোঞ্জ জিতেছেন কুটন। জালালপুর গুমড়া বাগান এলাকার অনিল চন্দ্র গড়ের মেয়ে কুটন এক সময় ফুটবল খেলতেন। তবে টিম ইভেন্টে সাফল্যের সম্ভাবনা কম থাকায় তিনি ব্যক্তিগত ইভেন্টে অংশ নেওয়ার দিতে ঝুঁকেন। এতে সাফল্যও আসে। আগামীতে রাজ্য দলের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কুটন।

*প্রীতম পাল*
শিলচরের গত দু’টি সুপার লিগ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য প্রীতম পাল। খেলেন রাইট ব্যাক পজিশনে। অরুণাচল এসএসের হয়ে সাফল্য পাওয়া প্রীতম গত মরশুমে জার্সি বদলে চলে যান ইন্ডিয়া ক্লাবে। এবার রামানুজ গুপ্ত মেমোরিয়াল সুপার ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন হয় শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবটি। প্রতিপক্ষকে আটকানোর দায়িত্বে সফল এই খেলোয়াড় এবার সুপার লিগে গোল না পেলেও বেশ কয়েকটি অ্যাসিস্ট করেছেন। উধারবন্দ টেবিল টেনিস ক্লাবের হয়ে ক্লাব ফুটবলে হাতে খড়ি প্রীতমের। বি ডিভিশন থেকে সরাসরি সুপার ডিভিশনের ক্লাবে জায়গা করে নেন। স্থানীয় পর্যায়ের প্রদর্শনী টুর্নামেন্টগুলিতেও প্রীতমের যথেষ্ট নামডাক রয়েছে।

*ভিকি সিন্ডাই*
এবার প্রতিভাবান ফুটবলারের পুরস্কার পাচ্ছেন ভিকি সিন্ডাই। কৃষ্ণপুর খাসিয়া পুঞ্জির বাসিন্দা বিমল সুঙ্গো এবং ইতিলদা সিন্ডাইয়ের বড় ছেলে ভিকি বর্তমানে শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষার্থী। সেই সূত্রে শ্যামাচরণ দেব বিদ্যাপীঠে পাঠরত। এবছর পিলিক চৌধুরী ট্রফি অনূর্ধ্ব ১৪ ফুটবলে তিন ম্যাচে চার গোল করেন তিনি। এছাড়া নিজেদের স্কুল দলকে রানার্স করার পথে গোলের বন্যা ব‌ইয়ে দিয়েছিলেন। ১৪ গোল করেন ভিকি। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মিনার্ভা পঞ্জাব অ্যাকাডেমিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে সেখানে যোগ দেওয়া হয়নি। তবুও ভিকির মধ্যে বড় ফুটবলার হয়ে ওঠার সব গুণ‌ই রয়েছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রতিবেদক : ইকবাল লস্কর, শিলচর।

Author

Spread the News