করিমগঞ্জ জেলায় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে সম্পন্ন
বরাক তরঙ্গ, ২৪ অক্টোবর : কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে সম্পন্ন হল প্রান্তিক জেলা করিমগঞ্জে। দুঃখ-কষ্ট সহ শত অভাব-অভিযোগ একপাশে রেখে আনন্দময়ীর মর্তে আগমন উপলক্ষে আনন্দে মেতে উঠেন উৎসব প্রেমী প্রতিজন বাঙালি হিন্দু। বাঁধ ভাঙা আনন্দ উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন সমগ্র জেলার উৎসব প্রেমী প্রতিজন বাঙালি হিন্দু। ষষ্ঠী থেকে নবমী জেলা সদরের বিগ বাজেটের পুজো দেখতে গ্রামাঞ্চলের জনগণের ঢল নামে শহরে। তবে প্রশাসনের চোখরাঙানিতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ধর্মপ্রাণ বাঙালি হিন্দুরা গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র বৃষ্টির ভ্রুকূটি উপেক্ষা করেও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন। আবহাওয়া দফতর থেকে ঘোষিত বৃষ্টি সহ ঝড়ের ভবিষ্যৎবাণী দেবী দশভূজার দর্শন অভিলাষীদের শঙ্কিত করে তুলেছিল। সবকিছু উপেক্ষা করেও ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত শহরের বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপ গুলোতে দর্শনার্থীদের ঢল নামে।
নবমীর রাত যত ঘনাতে থাকে শহরে ততোই জনজোয়ার বাড়তে থাকে। ভোর পর্যন্ত দর্শনার্থীরা দেবী দূর্গার দর্শন করতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমান। দশমীর দিন জেলার প্রতিটি পুজো মণ্ডপে মহিলাদের সিঁদুর খেলার মাধ্যমে জেলার সবর্ত্রই প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। গ্রাম করিমগঞ্জের প্রতিটি সর্বজনীন ও বারোয়ারি পূজার প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। শহরের বিগ বাজেটের পুজো কমিটি গুলো আজ প্রথম দিন প্রতিমা বিসর্জন করেনি।
এ দিকে, প্রশাসনের চোখরাঙানিতে এবার ‘ডিজে’ সংস্কৃতিতে বেশ লাগাম লেগেছে। মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণ থেকে শহরবাসী এবার কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। প্রতিমা নিরঞ্জন পর্বে দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার প্রতিটি বিসর্জন ঘাটে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, অগ্নিনির্বাপক বাহিনী ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে জড়িত সকল প্রকার জরুরীকালীন পরিষেবা গুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো। এদিকে, করিমগঞ্জের ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে কুশিয়ারা নদীতে এপারের বিসর্জন ঘাটে এবং ওপারের জকিগঞ্জ এলাকার বিসর্জন ঘাটে এক সঙ্গে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব সম্পন্ন হয়। এতে এপার-ওপার মিলে একাকার হয়ে যায়। দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত রেখা টানা কুশিয়ারা নদীর উভয় তীরে দেবী দূর্গার প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব এক উন্মাদনার সৃষ্টি করে। প্রতি বছরই উভয় দেশের বাঙালি হিন্দুরা বিজয়া দশমীর দিনে এক ঐতিহাসিক মূহুর্তের স্বাক্ষী হয়ে থাকেন। এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মহা আনন্দে উল্লাসের মধ্যে দিয়ে দু’দেশের ভক্তপ্রাণ সনাতনী ধর্মালম্বী লোকেরা বিসর্জন পর্ব শেষ করেন।
প্রতিবেদক : মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।