সতীন্দ্রমোহন দেব স্টেডিয়াম প্রসঙ্গে
।। ইকবাল লস্কর।।
বরাক তরঙ্গ, ৭ জুলাই : শিলচরের সতীন্দ্রমোহন দেব মেমোরিয়াল স্টেডিয়াম নিয়ে কৌতুহল অনেকেরই। গত ২ জুলাই বাকস আয়োজিত আন্তঃস্কুল ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় হঠাৎ করে এই প্রশ্নটিও উঠে আসে। তবে প্রথমে এটি কিন্তু সতীন্দ্রমোহন দেব স্টেডিয়াম ছিল না। ছিল শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠ। ১৯৬৩ সালের ১৭ জানুয়ারি শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এই মাঠের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আসামের তৎকালীন রাজ্যপাল বিষ্ণু সহায়। এ উপলক্ষে জেলাশাসক দল এবং পুর সভাপতি দলের মধ্যে একটি প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর এই মাঠে স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ভারতের তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি ফখরউদ্দিন আলি আহমদ। প্রসঙ্গত, ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ফখরউদ্দিন আলি আহমদ অসমের অর্থ ও রাজস্ব মন্ত্রী ছিলেন। সেই সময় শিলচর ডিএসএ-কে জমির বন্দোবস্ত করে দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন আসাম ফুটবল সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফখরউদ্দিন আলি আহমদ। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল সেই সময়কার শিলচরের পুরপ্রধান সতীন্দ্রমোহন দেবের। রাজ্য সরকার এখানে মাঠ ও স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ২৫ বিঘা জমি প্রদান করেছিল। তবে সামনের দিকে আরও ৯ বিঘা জমি কেনার ব্যবস্থা করেন সন্তোষমোহন দেব। তিনি তখন ডিএসএ-র সচিব ছিলেন।
১৯৯০ সালে অধ্যাপক কমলেন্দু ভট্টাচার্য সভাপতি ও মণি কর্মকার সচিব থাকার সময় আইটিএ (ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন) ক্লাবহাউস নির্মাণ করার জন্য এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেয়। সেই সময় জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ ছিলেন বাবুল হোড়। তিনি জানান, সতীন্দ্রমোহন দেবের নামে ক্লাবহাউস করার প্রস্তাব দেয় আইটিএ। পরের বছর সন্তোষমোহন দেব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। বিভিন্ন খাত থেকে স্টেডিয়াম নির্মাণের টাকা নিয়ে আসতে থাকেন তিনি। ক্রিকেট ও ফুটবলের একাধিক বেনিফিট ম্যাচও আয়োজন করান। ধীরে ধীরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠ একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়ামে রূপায়িত হতে থাকে।
১৯৯৬ সালের ১৯ মার্চ সন্তোষমোহন দেবের হাত ধরে সতীন্দ্রমোহন দেব স্টেডিয়াম ওপি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। বলতে গেলে সেদিনই এই নতুন নামে পরিচিতি লাভ করে শিলচরের মাঠ। এই স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে উত্তরপূর্ব পর্ষদ (এনইসি) এবং সেই সংস্থার কর্মকর্তা করিমগঞ্জের সুসন্তান প্রয়াত পঙ্কজ কুমার দেবের অবদান অনস্বীকার্য।