‘যে দোষ করিনি, সেই দোষে শাস্তি পেলাম’ : নোবেলজয়ী ইউনূস

২ জানুয়ারি : নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘যে দোষ করিনি, সেই দোষে শাস্তি পেলাম। এই দুঃখটা মনে রয়ে গেল।’ শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণার পর ড. ইউনূস সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা সোমবার এই রায়ে ইউনূসসহ চার আসামিকে ছয় মাসের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করেছেন।

ইউনূস ছাড়া বাকি তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

শ্রম আইনের ৩০৩ এর ৩ ধারায় তাদের প্রত্যেককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরো ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একই আইনের ৩০৭ ধারায় তাদের সবাইকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
তবে আপিলের শর্তে এক মাসের জামিন মঞ্জুর হওয়ায় আপাতত জেলে যেতে হচ্ছে না গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনূসসহ চারজনকে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।

শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।

চলতি বছরের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক। বাদীসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার রায় দিলেন তিনি।

এক মাসের মধ্যে আপিল করার শর্তে জামিন দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায়কে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আদালতের এ রায় অপূর্ণাঙ্গ। ড. ইউনূস আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাননি। আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। বাদীপক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ড.

ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের যে মামলা করেছিল, সেটি আমরা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। তারা (গ্রামীণ টেলিকম) শ্রম আইন না মেনে নিজস্ব আইন মেনেছেন। এ জন্য দুবার তাদের কারণ দর্শানো হয়। তারা কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। তাদের যে ত্রুটিগুলি ছিল, সেটি তারা সংশোধন করেনি। খবর : রিডমিক নিউজ।

Author

Spread the News