পঞ্চায়েত নির্বাচনের আসন সংরক্ষণ নিয়ে বৈঠক জেলা প্রশাসনের
বরাক তরঙ্গ, ৩০ ডিসেম্বর : কাছাড়ের জেলা আয়ুক্তের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সোমবার সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আসন সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদবের পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নির্বাচন আয়োগের নিয়মানুযায়ী স্বচ্ছতার সাথে সিদ্ধান্ত নেওয়া ওই বৈঠকের লক্ষ্য ছিল। এছাড়াও, বিভিন্ন পঞ্চায়েত রাজ প্রতিষ্ঠানের পর্যায়ে মহিলাদের, তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে জনবিন্যাসের ভিত্তিতে অনূসূচিত জাতি এবং উপজাতি জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের পর লটারির মাধ্যমে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয় ৫০ শতাংশ আসন। সব মিলিয়ে ২৫টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে অনুসূচিত জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে-২, অনুসূচিত মহিলাদের জন্য-২ এবং সাধারণ শ্রেণীর মহিলাদের জন্য-১১টি আসন। একইভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত, আঞ্চলিক পঞ্চায়েত এবং গ্রুপ স্তরেও।
অনুষ্ঠিত জাতি এবং উপজাতির জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে ২০০১ এর জনগণনার রিপোর্টের ভিত্তিতে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জেলার পঞ্চায়েত এলাকায় মোট ১৫’৪৮ শতাংশ লোক অনুসূচিত জাতির এবং উপজাতি ১’৬০ শতাংশ। অংকের হিসেবে মোট ২৫টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে সংরক্ষণের প্রশ্নে উপজাতির ক্ষেত্রে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১-এরচেয়েও কম (০’৪)। তাই উপজাতিদের জন্য জেলা পরিষদ আসন সংরক্ষণের কথা ভাবা হয়নি। অনুসূচিত জাতির ক্ষেত্রে অংকের হিসেবে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৩’৮৭। তবে ভগ্নাংশ ০’৫ এর বেশি হওয়ায় সংখ্যাটাকে পূর্ণ সংখ্যা অর্থাৎ ১ ধরে নিয়ে এই জাতি গোষ্ঠীর জন্য ৪টি আসন সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হিসেব কষে ক্রমপর্যায়ে অনুসূচিত জাতি গোষ্ঠীর লোকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে এমন চারটি আসন তাপাং- বড়সাঙ্গন (অনূসূচিত জাতি-৩১.৯৯ শতাংশ) গঙ্গানগর- রুকনি (অনূসূচিত জাতি -৩১.৮৯ শতাংশ), কাটিগড়া-লক্ষীপুর (অনূসূচিত জাতি-২৯.৯৮ শতাংশ) এবং শিলকুড়ি-চাতলা (অনূসূচিত জাতি -২৮.৯৪ শতাংশ) সংরক্ষিত করা হয়। এর পরবর্তী পর্বে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণে করা হয় লটারি। লটারিতে অনুসূচিত জাতির জন্য সংরক্ষিত ৪টি আসনের মধ্যে কাটিগড়া-লক্ষীপুর ও শিলকুড়ি-চাতলা এই দুটি আসন সংরক্ষিত করা হয় ওই জনগোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য।
এছাড়া সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে আরও ১১টি জেলা পরিষদ আসন। এই ১১টি আসন হল মোহনপুর-শালচাপড়া, ধলাই-নরসিংহপুর, রংপুর, আরকাটিপুর, শ্যামাচরণপুর-শেওরারতল, কালীবাড়ি-বিক্রমপুর, লক্ষীপুর-দিলখুশ, বাগপুর-সোনাবাড়িঘাট, বড়থল- হরিনগর, শিবপুর-বাঁশকান্দি ও শালগঙ্গা।
ওই বৈঠকে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ মুখ্য কার্যবাহী আধিকারিক প্রণব কুমার বরা, জেলা উন্নয়ন আয়ুক্ত নরসিং বে, অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্ত ভান লাল লিম্পুইয়া নামপুই, নির্বাচন আধিকারিক মাসি তোপ্নো, জেলার সকল চক্রাধিকারিকরা এবং খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক, সোনাই, বদরপুর, লক্ষীপুর পুরসভাগুলোর কার্যবাহী আধিকারিকরা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা সহ
কাছাড় জেলা প্রশাসনের কর্মচারীবৃন্দ প্রমুখ।