দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ ডিসেম্বর : বরাক উপত্যকার তিনটি জেলায় প্রাথমিক স্তরে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষাকে পাঠমাধ্যম হিসেবে চালু করার দাবিতে নিখিল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি মহাসভা সোমবার কাছাড় জেলা কমিশনার অফিসের সামনে থাকা শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর পাদুদশে বসে ৬ ঘণ্টার সত্যাগ্রহ অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে সত্যাগ্রহীরা মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকপত্র জমা দিয়ে তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি তুলে ধরেছে।

কাছাড় জেলা কমিশনার অফিসের সামনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৪টা পর্যন্ত চলা এই কর্মসূচিতে নিখিল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি মহাসভার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে অসংখ্য সত্যাগ্রহী অংশ নিয়েছে। কর্মসূচির মূল দাবি হল বরাক উপত্যকার কাছাড়, শ্রীভূমি ও হাফলং জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষাকে পাঠমাধ্যম হিসেবে চালু করা। এটি মহাসভার “৭ দফা দাবির খসড়া”-র প্রথম এবং সর্বোচ্চ দাবি। সত্যাগ্রহীদের মধ্যে ছিলেন গোপীদাস সিনহা সহ অন্যান্য নেতা-কর্মী। সত্যাগ্রহের সময় স্লোগান দেওয়া, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন এবং ভাষা অধিকার নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সত্যাগ্রহীরা স্মারকপত্রে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫০ক-এর অধীনে তাঁদের দাবি উল্লেখ করে বলেছে, ভাষাগত সংখ্যালঘু বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছে এবং বিভিন্ন আন্দোলনমুখর কর্মসূচি আয়োজন করেছে।স্মারকপত্রে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোভিন্দের উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে: “সরকারকে একটি ভাষার সংরক্ষণের জন্য কাজ করতে হবে।” তবু সরকারের উদাসীনতায় ভাষা বিলুপ্তির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন ড. কালীপ্রসাদ সিনহা বলেছেন, “একটি ভাষার মৃত্যু মানব সমাজের জন্য বিশাল ক্ষতি।”মহাসভা জানিয়েছে, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী সম্প্রদায়ের ভাষা অধিকার রক্ষায় তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকারের কোনো ইতিবাচক সাড়া না পেলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, মাতৃভাষায় শিক্ষা না পেলে সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পরিচয় হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।


