ভরাখাই চা-বাগান বন্ধ, অনিশ্চিতয়তার মুখে শ্রমিকরা

বরাক তরঙ্গ, ৭ সেপ্টেম্বর : মালিকপক্ষের চরম উদাসীনতা ও অবহেলায় তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে বাবু অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের আওতায় ভরাখাই চা বাগান। বরাক উপত্যকা র উপর গড়ে উঠা একটি প্রতিষ্ঠিত চা বাগানের কেন এই পরিণতি ? তা অনেকেরই বোধগম্য হচ্ছে না। এই মন্দার মরসুমে ও ছয় থেকে সাত হাজার কিলোগ্রাম কাঁচা পাতা প্রতিদিন আসে গাছ থেকে কিন্তু বাগানের চলমান একটি চা উৎপাদনের কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে বেশ কিছু দিন থেকে। ফলে কাঁচা পাতা পার্শ্ববর্তী নরসিংপুর চা বাগানে কম দরে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। ওই বাগানে এই মুহূর্তে  সাড়ে চারশো শ্রমিক ও পঁচিশ জন স্টাফ সহ এক সহকারী ম্যানেজার রয়েছেন। তাছাড়া বাগানের মোট জনসংখ্যা আঠারো শো-র কাছাকাছি। কর্তৃপক্ষ এর খামখেয়ালিতে তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুটোই অনিশ্চিয়তার মুখে। মঙ্গলবার সকালের খবর অনুযায়ী বাগান স্টাফ বিশ্বজিৎ দে-র মতে গত দু’মাস থেকে তাদের বেতন নেই, ফলে তাদের ঘরের দৈনন্দিন খরচ সহ বাচ্চাদের দুধ পড়াশোনা চালানো নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, কারণ বিকল্প আর তাদের উপার্জনের পথ নেই। চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক তলবও পাওনা রয়েছে, তাছাড়া সাপ্তাহিক রেশন ও সঠিকভাবে মিলছে না।

ভরাখাই চা-বাগান বন্ধ, অনিশ্চিতয়তার মুখে শ্রমিকরা

এদিকে বিদ্যুতের বকেয়া দশ লাখ টাকা পার হয়ে যাওয়াতে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ ফলে ওই দুর্গম এলাকায় অন্ধকারের মধ্যে রাত কাটাচ্ছেন বাগানের মানুষ। বাগান পঞ্চায়েত রা নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি ধোয়ারবন্দ পুলিশকে জানালে তারা প্রতি রাতে পেট্রোলিং করছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। কারণ চুরি ডাকাতির জন্য ওই এলাকাটি যথেষ্ট খবরের শিরোনামে ছিল। অন্যদিকে কিছুদিন আগে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বাগানের অফিসের দেওয়ালে প্রায় সাতচল্লিশ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করার একটি নোটিশ টানিয়ে গেছে, যা বাগানের বর্তমান মূল্য থেকে বহু গুণ বেশি। বিষয়টি নিয়ে বাগানের শ্রমিক ও স্টাফ দের  আরও বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কারণ মালিক পক্ষ ওই টাকা বাগানের উন্নয়নে কোথায় খরচ করেছেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে কি মালিক পক্ষের অন্য কোন অভিসন্ধি রয়েছে এর পিছনে? কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না, তাছাড়া সামনেই পুজো, প্রতিবছর বোনাসের জন্য পুজোর দু’মাস আগেই শ্রমিকপক্ষ ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়ে যেতো কিন্তু এবছর কোন হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তা র ভাঁজ পড়েছে বাগানের বাবু ও শ্রমিক দের কপালে।

এদিকে বাগানের সহকারী ম্যানেজার রাজা দেব বাগানের কারখানা বন্ধের ব্যাপারে বলেন, যে ফ্যাক্টরি চালিয়ে যথেষ্ট লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে কোম্পানিকে তাই মালিকপক্ষের নির্দেশে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে তিনি নতুন কাজে যোগ দিয়েছেন এর বেশি তিনি কিছুই জানেন না।

Author

Spread the News