লটারি নামে প্রতারণা, প্রতারককে পুলিশে দিলেন জনতা

হাতিয়ে নিল লক্ষ লক্ষ টাকা____

বরাক তরঙ্গ, ২৫ জানুয়ারি : লটারি খেলার নামে শত শত মানুষের কাছ থেকে মাসিক ৬০০ টাকা কিস্তিতে গত ১৭ মাসে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। অভিযোগ মতে “সান লাইট গ্রুপ” সোনাই বাজার নামে প্রতারক চক্রটি স্বঘোষিত একটি গ্রুপ গঠন করে নিজস্ব শর্তাবলীতে লটারি এবং টেন্ডার মারুপ নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত গ্রামের মানুষদের টার্গেট করে শুরু হয় প্রতারণার ব্যবসা। স্বঘোষিত সংগঠনের শর্তাবলীতে উল্লেখ মতে ৩০০ জনকে নিয়ে একটি গ্রুপ,  প্রতিজন সদস্য মাসে ৬০০ টাকা করে জমা দিতে হবে। প্রতি মাসের ৩ তারিখে হবে লটারি খেলা। কমিটির কাছে বিশেষ ক্ষমতায় কোন মাসে লটারি না-ও হতে পারে। অস্পষ্ট শব্দ টেন্ডার নামে আরেকটি ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বঘোষিত শর্তাবলীতে। এ ছাড়া শর্তাবলীতে উল্লেখ রয়েছে লটারি বিজেতা পাবেন ৬০ হাজার টাকা। কোন সদস্য মারা গেলে উত্তরাধিকারীকে এককালীন ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে। এভাবে কিছু নিয়ম ও শর্তাবলীতে দীর্ঘদিন থেকে গরিব সহজ সরল মানুষদের সঙ্গে চলছে প্রতারণা বাণিজ্য।

লটারি নামে প্রতারণা, প্রতারককে পুলিশে দিলেন জনতা

চক্রটি গত ১৭ মাস আগে অসম- মিজোরাম সীমান্তের প্রত্যন্ত অঞ্চল  করকটবস্তুিতে তাদের প্রতারণার জাল বিছায়। সেখানে প্রতারক চক্রের প্রতারণার শিকার হন অন্তত দেড়শ টি পরিবার। দেড়শ পরিবারের কাছ থেকে মাসিক ৬০০ টাকা কিস্তিতে গত ১৪ মাসে ১২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয় প্রতারক চক্র। গত ১৪ মাসে দেড়শ পরিবারের মধ্যে   তিনজনকে লটারি বিজেতা ঘোষণা করে ৬০ হাজার টাকা করে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা ফেরত দেয় চক্রটি। তিনজন বিজয়ী হয়েছেন দেখিয়ে চক্রটি আরও নতুন সদস্য ভর্তি করে।
ভালোই চলছিল তাদের প্রতারণা ব্যবসা।

লটারি নামে প্রতারণা, প্রতারককে পুলিশে দিলেন জনতা

এরমধ্যে একজনের মৃত্যু। গত দুই মাস আগে প্রতারক চক্রের লটারির নামে প্রতারিত হওয়া একজন সদস্য সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। প্রতারক চক্রটির শর্তাবলীতে উল্লেখ মতে কোন সদস্য মারা গেলে তার পরিবারকে এককালীন ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। মৃতের পরিবার যখন ৬০ হাজার টাকা দাবি করে তখন প্রতারক চক্রটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটলে অনুদান দেওয়া হয় না যুক্তি দেখিয়ে মৃতের পরিবারকে টাকা দিতে অস্বীকার করে। দেরিতে হলেও তারা বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারা মাসিক কিস্তি উঠিয়ে নিতে আসা প্রতারক চক্রের পাণ্ডা সোনাই মোহনপুরের বাসিন্দ পত্তর আলি আটক করে, কেন মৃতের পরিবার ঘোষিত ৬০ হাজার টাকা পাবে না সঠিক উত্তর জানতে চান। সন্তুষ্টিজনক উত্তর দিতে না পারায় তারা স্থানীয় ভিডিপির মাধ্যমে প্রতারক চক্রের পাণ্ডাকে ধলাই পুলিশের হাতে সমঝে দেন। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন অভিযোগে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ধলাই থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন তরা। এফআইআরে সই করেন ৪৭ জন। এফআইআরের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে।
প্রতিবেদক : রাজীব মজুমদার, ধলাই।

Author

Spread the News