গুয়াহাটিতে ১০৮ অ্যাম্বুলেন্স কৰ্মীদের আন্দোলন দ্বিতীয় দিনেও জারি

বরাক তরঙ্গ, ২ ডিসেম্বর : গুয়াহাটি মহানগরীর চচল ধরনাস্থলে ন্যায্য দাবির ভিত্তিতে দ্বিতীয় দিনেও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন ১০৮ এম্বুলেন্স পরিষেবার একাংশ চালক ও কর্মী। সম্প্রতি জিভিকে–ইএমআর সংস্থা আন্দোলনরত কর্মীদের তৎক্ষণাত কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ জারি করে स्पष्ट জানিয়ে দেয়—দ্রুত কাজে ফিরতে না চাইলে তাঁদের স্থানে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। তবে এই নির্দেশ উপেক্ষা করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ১০৮ পরিষেবার কর্মীরা।

উল্লেখ্য, জরুরি পরিষেবা ১০৮এর চালক ও কর্মীরা আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোয় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরিষেবায় যুক্ত কর্মীরা আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানবিকতার খাতিরে স্বাস্থ্যকর্মীদের উচিত এধরনের আন্দোলন থেকে দূরে থাকা। এই পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের আন্দোলনে অংশ নেওয়াকে তিনি মানবিকতার পরিপন্থী বলে কটাক্ষ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় — “যদি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসকল দায়িত্ব পালন করতে না চান, তবে তাঁদের স্থান অন্যকে ছেড়ে দিতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই কঠোর অবস্থানের পরেই এনএইচএম ও স্বাস্থ্য বিভাগ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আরও কড়া ভূমিকা নেয়।

যদি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসকল দায়িত্ব পালন করতে না চান, তবে তাঁদের স্থান অন্যকে ছেড়ে দিতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী

সারা অসম ১০৮ মৃত্যুঞ্জয় কৰ্মচারী সংস্থা উদ্যোগে চাকরি নিয়মীয়াকরণ, ন্যায্য মানের বেতন, ১২ ঘণ্টা শিফটের অতিরিক্ত মজুরি প্রদান, বার্ষিক বোনাসসহ একাধিক দাবি পূরণের দাবিতে ১ ডিসেম্বর থেকে সম্পূর্ণভাবে ১০৮ জরুরি সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কর্মীরা। এর ফলে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, জিভিকে–ইএমআর কর্তৃপক্ষ ১০৮ কর্মীদের চলমান আন্দোলনকে অবৈধ ঘোষণা করে তাঁদের স্থলে নতুন কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত জানাতেই সমগ্র ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয় দিনেও ধরনাস্থলে ৫০০-র বেশি ১০৮ অ্যাম্বুলেন্স কর্মী হাতে দাবিপত্র ও পোস্টার নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগানে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন।

প্রতিবাদস্থলে উপস্থিত কর্মীরা সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ১০৮ কর্মীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের দাবিতে আন্দোলন চালিয়েও আমরা আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাইনি। না সরকার, না ব্যবস্থাপনা—কোনও পক্ষ থেকেই সন্তোষজনক সাড়া মেলেনি।”

এ দিকে, ইএমআরআই–এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, অসমের মানুষ বরাবরই ১০৮ জরুরি পরিষেবার ওপর আস্থা রেখেছে এবং সংস্থাও সেই বিশ্বাস অটুট রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই আন্দোলন শুরুর প্রথম দিন থেকেই পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা হয়।

জরুরি কল সেন্টারের কাজ ব্যাহত না হয় সেজন্য অতিরিক্ত সহায়ক কর্মী নিয়োগ করা হয় এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রথম দিনেই ৭০টি অ্যাম্বুলেন্স পুনরায় চালু করতে সক্ষম হয় সংস্থা। যদিও বহু চালক অ্যাম্বুলেন্সের চাবি ও সরকারি মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রশাসনের উদ্যোগে চাবি উদ্ধার করা হয় এবং প্রয়োজনে ডুপ্লিকেট চাবির ব্যবস্থাও করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *