ম্যানেজারের দুর্ব্যবহার, হাতিছড়া চা বাগানে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বরাক তরঙ্গ, ১৮ মার্চ : বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে এবিসিএমএস এর প্রতিনিধিরা ম্যানেজারের কাছে স্মারকপত্র দিতে গেলে ম্যানেজার মহেশ সিং অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। তিনি স্মারকপত্র গ্রহন করেননি, অত্যন্ত রুক্ষ ভাবে কথা বলেন এমনকি ঘরে ঢোকার অনুমতি পর্যন্ত দেননি এবং ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোন প্রকার আলোচনা করতে অস্বীকার করেন। শুধু তাই নয়, উপস্থিত শ্রমিকদের সেদিন কাজে না যাওয়ার হুকুম জারি করেন। এর বিরুদ্ধে শ্রমিকরা তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং অফিসের সামনে এক ঘন্টার অবস্থান বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। শুক্রবার সকালে সিটুর অনুমোদিত অখিল ভারতীয় চা মজদুর সংঘের উদ্যোগে প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক সমবেত হয়ে হাতিছড়া চা বাগান অফিসের সামনে ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

এ দিন ম্যানেজারের এহেন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বাগানের নাচ ঘরে এক সভায় মিলিত হন আন্দোলনকারীরা। গণতান্ত্রিক অধিকার এবং ন্যয্য দাবি আদায়ে তীব্র আন্দোলন সংগঠিত করার অভিমত ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী ২২ মার্চ বুধবার সকাল ৮ টায় হাতিছড়া নাচঘরে এক বৃহত্তর সভা আহ্বান করা হয়েছে। অখিল ভারতীয় চা মজদুর সংঘের পক্ষ থেকে সহকারি শ্রম আইন এবং জেলাশাসকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হাতিছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা বিভিন্ন ভাবে কর্তৃপক্ষের হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ২০১৮ সাল থেকেই পরপর তিনবার সরকারি নির্দেশে মজুরি বৃদ্ধি হলেও বর্ধিত মজুরির এরিয়ারের টাকা আজও শ্রমিকরা পাননি, বাস গৃহ নির্মাণ এবং সংস্কারের কাজ আইন মোতাবেক হচ্ছে না, মহিলাদের উপর অধিকতর কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, দশ নলের জায়গায় পঁচিশ নল কাজ করানো হচ্ছে। ছয় দিন কাজ না করলে রেশন থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, বিশুদ্ধ জলের বণ্টন অনিয়মিত। নিয়ম মাফিক বাগান পঞ্চায়েত গঠনে গড়িমসি করছেন, এক কথায় কর্তৃপক্ষ নিয়ম নীতি মানবিকতা তথা আইনের তোয়াক্কা না করেই বাগান পরিচালনা করছেন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ মার্চ এক শ্রমিক সভায় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। আজকের এই শ্রমিক বিক্ষোভে সিটু ও এবিসিএমএস এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সমীরণ আচার্য, সুপ্রিয় ভট্টাচার্য, মণীশ কর্মকার, গোপাল ভুমিজ, শান্তি ঘাটোয়ার, পরেশ বাকতি প্রমুখ।

Author

Spread the News