“গণতন্ত্র বাঁচাও”, “ভোটাধিকার রক্ষা করো” স্লোগানে উত্তাল রামলীলা

১৪ ডিসেম্বর : দিল্লির রামলীলা ময়দানে আজ SIR ইস্যুকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের ডাকা বিশাল সমাবেশে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানাল কংগ্রেস নেতৃত্ব।

রাহুল-‌প্রিয়াঙ্কা এদিন নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার, কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু এবং বিবেক জোশিকে দেশ কখনও ভুলবে না। মোদি সরকার তাদের যতই বাঁচানোর চেষ্টা করুক না কেন, একদিন ওদের দেশের কাছে জবাবদিহি করতেই হবে। রাহুল গান্ধী বলেন,‘‌নরেন্দ্র মোদি নির্বাচন কমিশনারদের রক্ষায় আইনে বদল এনেছেন, যাতে ওরা যা খুশি করলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবেনা। কিন্তু মনে রাখুন, আমরা এই কমিশনারদের রক্ষার আইনে সংশোধন করব এবং তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করব। নির্বাচন কমিশন বিজেপির নয়, এটা বোঝা উচিত ওদের।’‌ রাহুল দাবি করেছেন, কংগ্রেসের ‘ডিএনএ’-তেই ‘‌সত্য’‌ রয়েছে, আর বিজেপি-আরএসএসের রাজনীতি ‘‌অসত্য’‌ ও ভোট চুরির ওপর দাঁড়িয়ে। ভোট চুরি মানে সংবিধান ও আম্বেদকরের আদর্শের ওপর আঘাত। তাঁর মতে, সত্য বনাম অসত্যের এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জিতবে কংগ্রেসের আদর্শ। সত্যকে হাতিয়ার করেই নরেন্দ্র মোদি-‌অমিত শাহদের ক্ষমতাচ্যুত করবে কংগ্রেস।

সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অজয় কুমার লাল্লু বলেন, “যেভাবে দেশের গণতন্ত্রকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে বিজেপি সরকার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। এটা শুধু রাজনৈতিক লড়াই নয়, এটা দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম।” তাঁর দাবি, SIR-এর নামে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের সমর্থকদের ভোটাধিকার খর্ব করার চেষ্টা চলছে।

লাল্লু আরও বলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একের পর এক রাজ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভোটার তালিকা, ভোটার সংখ্যা এবং বুথভিত্তিক তথ্য তুলে ধরেছেন। “রাহুল গান্ধী শুধু অভিযোগ করেননি, তিনি প্রমাণ দিয়েছেন। প্রতিটি রাজ্যে কীভাবে ভোটার তালিকায় কারচুপি হয়েছে, তা তিনি দেশবাসীর সামনে এনেছেন,” বলেন লাল্লু। তাঁর মতে, এই তথ্য সামনে আসার পরই বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে।

কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, SIR প্রক্রিয়ার আড়ালে নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিজেদের পক্ষে সাজানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। বিরোধীদের দাবি, প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার খর্ব করা এবং শাসকদলের অনুগতদের সুবিধা করে দেওয়াই এই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য। আজকের সমাবেশে একাধিক কংগ্রেস নেতা এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এমন চলতে থাকলে আগামী দিনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠবে।

রামলীলা ময়দানের সমাবেশে উপস্থিত কংগ্রেস সমর্থকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো ছিল। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে তারা “গণতন্ত্র বাঁচাও”, “ভোটাধিকার রক্ষা করো” স্লোগানে মুখর করে তোলে গোটা এলাকা। বক্তারা বারবার সংবিধানের কথা তুলে ধরে বলেন, ভারতের শক্তি তার গণতন্ত্রে, আর সেই ভিত্তিকেই দুর্বল করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *