জুবিনকে মরণোত্তরভাবে ডি-লিট সম্মান কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের_____
বরাক তরঙ্গ, ৯ ডিসেম্বর : প্রয়াত শিল্পী জুবিন গৰ্গকে মরণোত্তরভাবে ডি-লিট (ডক্টর অব লিটারেচার) সম্মানে ভূষিত করল কটন বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার গুয়াহাটির শ্রীমন্ত শঙ্করদেব আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাগৃহে কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রয়াত শিল্পীকে এই মরণোত্তর সম্মান প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল লক্ষ্মণপ্রসাদ আচার্য এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নস্টালজিক হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “নিজে পড়াশোনা করা এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আসার সুযোগ যখন পাই, তখন তা আমার কাছে অতীত স্মৃতিচারণের পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতের আনন্দের এক বিশেষ মাধ্যম হয়ে ওঠে। আজ রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের উপস্থিতিতে কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সেই অনুভূতিই আরও সুন্দর হয়ে উঠেছে। এই সুযোগে কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে আমি গর্বিত। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমি আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছি। ১৯৮৫ সালে আমাদের রাজ্যে নতুন আশার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। তখন অসম আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে। সেই সময়ে আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে তেমন উন্নতি দেখিনি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে ছাত্রছাত্রীদের পুনে-মহারাষ্ট্রের মতো জায়গায় পড়তে যেতে হতো। চারদিকে বন্দুকের শব্দের কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছিল পরিবেশ। সংগ্রাম আর সংঘাতের মধ্যেই জীবন কাটাতে হতো। কখনও ভাবিনি যে ভালো দিন আসবে। সবসময় অন্ধকারেই থাকতে হবে—এমন ধারণা ছিল। কিন্তু আজ না বললেও চলে, ভালো দিন এসেছে। মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়ে উঠেছে।”

নিজের শিক্ষাজীবনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন পড়তাম, তখন পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ ছিল না। এখন সেই পরিবেশ রয়েছে। সিমু দাসের মতো প্রতিভার সম্ভাবনা আজ অসমের মাটিতেই আছে। অসমের ৮০০-রও বেশি যুবক-যুবতী আইফোনের মতো সংস্থায় কাজ করছে। যুব প্রজন্মের সেই সম্ভাবনা আজ বাস্তব হয়ে উঠেছে। এখন আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।”
কটনকে নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার প্রথম পরিচয় হলো—আমি কটন কলেজের ছাত্র। আমার মতো বিশ্বের হাজার হাজার মানুষ নিজেদের পরিচয় দেয় কটনের নামেই। কটন থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা কখনও নেতিবাচক চিন্তার হতে পারে না। একজন কটনিয়ান সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করে। কটনের শক্তি কতটা, তা কটন ছেড়ে বেরোনোর পরেই প্রতিটি ছাত্রছাত্রী উপলব্ধি করতে পারে।”


