লোন দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার সংখ্যালঘু মোর্চার হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি

লোন দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার সংখ্যালঘু মোর্চার হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি

বরাক তরঙ্গ, ২ সেপ্টেম্বর : লোন দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি। শিলচর থেকে তারাপুর পুলিশের সহায়তায় হাইলাকান্দি পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে আমজাদুল হুসেন মজুমদারকে। পাশাপাশি সোমবার বিকেলে পুলিশ গ্রেফতার করে তার ছোট ভাই মিলু মজুমদার সহ অন্য ৯ জনকে। এরা সবাই সিংহানিয়া ফিনটেক এগ্রিবিসনেস কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেডের হাইলাকান্দি শাখার কর্মী। বৃহৎ ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে কয়েক সহস্রাধিক মানুষ থেকে দুই হাজার টাকা করে অগ্রিম সংগ্রহ করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে পুলিশ সিল করে সিংহানিয়া ফিনটেক এগ্রিবিসনেস কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেডের হাইলাকান্দির শাখা কার্যালয়ও।

প্রায় ৮ মাস আগে হাইলাকান্দি শহরের স্টেশন রোডে ঘটা করে দ্বারোদঘাটন করা হয়েছিল একটি কার্যালয়ের। বাইরে ফলকে নাম লিখা ছিলো সিংহানিয়া ফিনটেক এগ্রিবিসনেস কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু যাবতীয় কাগজপত্রে ব্যবহৃত হতো প্রাগজ্যোতিশ ফিনটেক কেপিটেল সলিউশন লিমিটেড৷ সাধারণ মানুষকে জানানো হয়েছিল এটি একটি মাইক্রো ফাইনেন্স সংস্থা। যা অন্যান্য মাইক্রো ফাইন্যান্সের মতোই ঋণ দেবে। আর কিছু দিনের মধ্যেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে রূপান্তর হবে৷ একথা বলে হাইলাকান্দি শহরের বেশ কিছু শিক্ষিত যুবক যুবতীকে চাকরিতেও নিয়োগ করা হয়েছিল। বিশেষ করে টার্গেট করা হয়েছিলো গৃহবধূদের। প্রত্যেকটি গ্রাম ও ওয়ার্ডে মহিলাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল৷ আর এদের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ থেকে দুই হাজার টাকা করে সংগ্রহ করা হয়েছিল। একই ধাঁচে শিলচর, করিমগঞ্জ সহ বরাকের বিভিন্ন শহরে কার্যালয় চালু করা হয়েছিল। আর এই সব কিছুর পেছনে ছিলেন হাইলাকান্দি বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি আমজাদুল হুসেন মজুমদার ওরফে লিলু।

লোন দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার সংখ্যালঘু মোর্চার হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি

এদিকে ২০০০ টাকা করে ফি নেওয়ার পর যখন ঋণ দেওয়ার সময় আসে তখনই স্পষ্ট হয়ে উঠে প্রতারণার ছক। আজ কাল পরশু বলে গ্রাহকদের হয়রানি আরম্ভ হয়৷ কয়েকদিন থেকে হাইলাকান্দি শাখায় বারবার আসা যাওয়া করতে করতে অবশেষে সোমবার কোম্পানির হাইলাকান্দি স্টেশন রোড কার্যালয় ঘেরাও করেন গ্রাহকেরা। তাঁরা দুই হাজার টাকা জমা দেওয়ার পরও কেন তাদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে না তা’ জানতে চান। কিন্তু কার্যালয়ের কর্মীদের কাছে এর সঠিক কোনও জবাব ছিল না। এনিয়ে এসব গরীব মেহনতি সহজ সরল পুরুষ মহিলারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা একজোট হয়ে কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

পুলিশ এসে দীর্ঘ প্রায় তিন ঘন্টা কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে কার্যালয়টি সিল করে। পাশাপাশি কার্যালয় থেকে ৯ জন কর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে৷ এরমধ্যে রয়েছেন আমজাদুল হুসেনের নিজের ছোট ভাই মিলু মজুমদারও।

এদিকে, তারাপুর পুলিশের সহায়তায় হাইলাকান্দি পুলিশ গ্রেফতার করে সংস্থার বরাক ভ্যালির কো-অর্ডিনেটর আমজাদুল হুসেন মজুমদারকে। তিনি আবার ভারতীয় জনতা পার্টির হাইলাকান্দি জেলা কমিটির সভাপতি। সোমবার রাতেই তাকে হাইলাকান্দিতে নিয়ে যায় পুলিশ।

Author

Spread the News