বরাক তরঙ্গ, ১৮ নভেম্বর : অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি দল এপিডিসিএলের পানপট্টিস্থিত কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সাব ডিভিশন্যাল ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন সম্পর্কিত একটি নোটিশ জারির বিষয়ে আলোচনা করে। কমিটির অন্যতম সদস্য অরিন্দম দেব তাকে বলেন, কিছু কিছু বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ঘরে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে যে তারা স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন না করলে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
অরিন্দম দেব বলেন, ১৬ জুলাই ২০২৫ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন যে স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন কোনও গ্রাহকের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক নয়। তাছাড়া অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন ২০২২ সাল থেকে স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের বিরুদ্ধে যে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তাতেও রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী সহ এপিডিসিএল এর উচ্চ পদস্থ আধিকারিকগণ বলেছিলেন কারো ঘরে জোর করে স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন করা হবে না। অসম ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশনা ছিল যে গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনা করে স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন করতে হবে অর্থাৎ জোর করে নয়। ফলে এধরনের নির্দেশ সাধারণ গ্রাহকদের আতংকিত করে তুলে। প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য সঞ্জীব রায় বলেন প্রিপেড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন করতে বহু ক্ষেত্রে বল প্রয়োগের অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে এতে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি বলেন বিদ্যুৎ বিভাগ ও গ্রাহকদের সমন্বয়ে এতদিন ধরে কাজ চলছিল। কোথাও কেউ অসাধু উপায়ে বিদ্যুৎ চুরি করলে বা বিদ্যুৎ এর বকেয়া পাওনা নোটিশ পেয়েও মিটিয়ে না দিলে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতো। কিন্তু সাধারণ একটি বিদ্যুতের মিটার প্রতিস্থাপন না করলে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া কখনও হয়নি। প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য হিল্লোল ভট্টাচার্য বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির হাতে তুলে দিতে প্রিপেড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া শুরু হয়। দেশের অন্যান্য রাজ্যে গ্রাহকদের আন্দোলনের চাপে সরকার পিছিয়ে যায়। অসম সরকার জনগণের তীব্র আন্দোলনের ফলে তা বাধ্যতামূলক না করলেও প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া বন্ধ করেনি। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার ও আদানীর মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় এপিডিসিএলের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তিগত কোম্পানিও থাকবে। এর পরিনাম গ্রাহকদের কাছে যেমন মারাত্মক হবে বিদ্যুৎ বিতরণ খণ্ডের শ্রমিক কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও হবে ভয়াবহ। ইতিমধ্যে এর আইনি বৈধতা প্রদানের জন্য ইলেকট্রিসিটি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল, ২০২৫ আনা হয়েছে। তিনি বিভাগীয় আধিকারিকদের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের প্রতি অবিবেচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান। এছাড়াও প্রতিনিধি দলে ছিলেন মৃনালকান্তি সোম। এসডিই দীর্ঘ ক্ষণ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।


