ধনেহরির ফাইনালে রক্তারক্তি কাণ্ড, রানার্স দলকে দেওয়া হয়নি ট্রফি

বরাক তরঙ্গ, ১৫ অক্টোবর : রেফারির প্রতিটি বাঁশিতে আপত্তি এবং শেষ বাঁশি বাজতেই রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটল ধনেহরি ফুটবল অ্যাকাডেমির ফাইনাল ম্যাচে। রবিবার উত্তর ধনেহরির মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় ১-০ গোলে চ্যাম্পিয়ন হয় ধনেহরি এফসি। তারা হারায় আসাম পেট্রোলিয়াম মজদুর ইউনিয়নকে। খেলার শেষ দুই মিনিট আগে জয়সূচক গোলটি করেন ধনেহরি এফসির মিলিনিও।

খেলার মাঠের ভেতরের চেয়ে বাইরে উত্তেজনা ছিল তীব্র। মজদুর ইউনিয়নের সমর্থকদের মধ্যে শুরু থেকেই চাপা উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে বার কয়েক কমিটির কর্মকর্তারা তাদের কাছে যেতে হয়েছে। মজদুর ইউনিয়ন টিমে মূলত ধনেহরি কয়েকজন লোক শরিক ছিলেন। এমনকি ফুটবল একাডেমির সহ-সভাপতি আলিমুল হক চৌধুরীও ওই দলে ছিলেন। খেলা চলাকালীন তিনি বারবার মেজাজ হারান। প্রথমে লাইনস রেফারেন্সের বিরুদ্ধে তারা অভিযোগ উত্থাপন করে এরপর রেফারির দিকেও অভিযোগের আঙ্গুল তুলতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত খেলায় রানার্স হয় মজদুর ইউনিয়ন। খেলায় শেষ বাঁশি  বাজিয়ে রেফারি মাঠ থেকে বের হওয়ার আগেই তারা রেফারিকে আক্রমণ করার লক্ষ্যে দৌড় দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কমিটির কর্মকর্তারাও দৌড়ে মাঠে প্রবেশ করেন এবং চারজন রেফারিকে সুরক্ষিত ভাবে মঞ্চে নিয়ে আসেন। কিন্তু উত্তেজিত সমর্থকরা মঞ্চের দিকে এগিয়ে এলে তখন এলাকার প্রবীণ নাগরিক জসিম উদ্দিন লস্কর (ময়না) বেরিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার সময় কোন একজন তাঁর ওপর আক্রমণ করে বসেন। এতে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও অতিথিরা সামাল দেন।

ধনেহরির ফাইনালে রক্তারক্তি কাণ্ড, রানার্স দলকে দেওয়া হয়নি ট্রফি

তীব্র উত্তেজনার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি সহ নগদ ৩০,০০০ টাকা তুলে দেওয়া হয়। এবং রানার দলকে কোন পুরস্কার দেওয়া হয়নি। পুরস্কার তুলে দেন জিপি সভাপতি সাবিনা হাবিব বড়ভূইয়া, ইজাজ হোসেন লস্কর, মজিব বড়ভূইয়া, বদর উদ্দিন মজুমদার, হোসেন আহমেদ লস্কর, সুমিয়ারা বেগম লস্কর, মবজ্জিল হুসেন বড়ভূইয়া প্রমুখ।

ধনেহরির ফাইনালে রক্তারক্তি কাণ্ড, রানার্স দলকে দেওয়া হয়নি ট্রফি
আহত জসিম উদ্দিন লস্কর।

এদিকে ফুটবল অ্যাকাডেমির সভাপতি শামসুল ইসলাম বড়ভূইয়া ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, সোনাই পুলিশের অবহেলার দরুন এই রক্তাক্ত কাণ্ড। তিনি বলেন, সিআরপিএফ বাহিনী দেওয়ার জন্য সোনাই থানায় জানানো হলেও দেওয়া হয়নি। এছাড়াও তিনি এই উত্তেজনার পেছনে রেফারি শামিম আহমেদ বড়ভূইয়াকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন যারা এই নিকৃষ্ট ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে। এছাড়াও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ইজাজ হোসেন লস্কর, সজীব লস্কর, রাজিম উদ্দিন লস্কর, হাসান জামান লস্কর, সাহাব উদ্দিন লস্কর সহ আরও কয়েকজন। সবাই এ ঘটনার নিন্দা জানান।
এ দিন খেলা পরিচালনায় ছিলেন সুরজিৎ মালাকার, যিশু দাস, সৌমিত্র দাস ও হোসেন আহমেদ বড়ভূইয়া।

Author

Spread the News