রূপক চক্রবর্তী, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৫ ডিসেম্বর : সারা বিশ্বের বরাক উপত্যকার তিন জেলায়ও ক্রিসমাস অর্থাৎ বড়দিন সাড়ম্বরে পালন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শিলচরের বিভিন্ন গির্জা আয়োজন করা হয় নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা নামতেই গির্জাগুলোতে উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। খ্রিস্ট ধর্মীয় ছাড়াও ভিন ধর্মের লোকদেরও ভিড় দেখা যায়। এদিন সকালে বাইবেল পাঠ ও প্রার্থনা সভায় অংশ নেন শহরের খ্রিস্ট ধর্মীয় মানুষ। বড়দিন উপলক্ষে শিলচরের ওরিয়েন্টাল স্কুল, হলিক্রস স্কুল ও ডোন বস্কো সহ বিভিন্ন গির্জায় উপস্থিত হয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা।
বড়দিনকে ঘিরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় থাকা গির্জাগুলোকে আকর্ষণীয় ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে যিশু খ্রিস্টের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। বিকেলে তরুণ-তরুনী সহ বিভিন্ন ভাষা জনগোষ্ঠীর মানুষ উৎসবে সামিল হয়ে বড়দিনকে মিলন ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। বড়দিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার শিলচরেও এক উৎসবমুখর পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়।

শহরের সামাজিক মাধ্যম ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলিতেও বড়দিনের আমেজ স্পষ্ট ছিল। শিলচরের বিভিন্ন স্থানে সাজানো ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন করা হয়, যেগুলি সেলফি পয়েন্ট হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। শহরের মল, শোরুম ও গির্জাগুলিতে ছিল উল্লেখযোগ্য ভিড়। বড়দিনের পরপরই নববর্ষ আসায় ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি জোরদার করেছেন। সান্তা ক্যাপ, ক্রিসমাস ট্রি, সাজসজ্জার আলো, উপহার সামগ্রী ও কেক বিক্রি করা দোকানগুলিতে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। গির্জাগুলি সাজিয়ে তোলা হয়েছে, আর বহু পরিবার বড়দিনের আগেই বাড়িঘর আলোকসজ্জায় মুড়ে ফেলেন। শিশুদের মধ্যে লাল-সাদা সান্তা ক্যাপ ও সংশ্লিষ্ট সামগ্রী ছিল বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
দীর্ঘদিনের রীতি মেনে রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমেও বড়দিন উদযাপিত হয়। সেখানে বিশেষ প্রার্থনা সভা, প্রসাদ বিতরণ ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়। জনিগঞ্জ, সেন্ট্রাল রোড, ফাটকবাজার, প্রেমতলা, কলেজ রোড, রাঙ্গিরখাড়ি ও তারাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি স্টল বসে, যেখানে ক্রিসমাসের সাজসজ্জা ও উপহার সামগ্রী বিক্রি হয়। মাল্টিপ্লেক্স ও শোরুমগুলিও বিশেষ সেলফি জোন তৈরি করে, যা উৎসবের মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে সামাজিক মাধ্যমে ভাগ করে নিতে আগ্রহী মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে ওঠে।


