হাইলাকান্দি গান্ধী ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন চলাকালীন রাবন দহন
বরাক তরঙ্গ, ২৫ অক্টোবর : প্রকৃতি স্বদয় থাকায় এবছরের দুর্গোৎসব বেশ আনন্দদায়ক ছিল হাইলাকান্দিবাসীদের কাছে। আর এবছর প্রতিমা নিরঞ্জন ঘাটে দর্শনার্থীদের মধ্যে বাড়তি পাওনা ছিল বিশাল কায়ার প্রতীকী রাবন। যা দহন করেন রাম সাজে সজ্জিত ভূবন রবিদাস। এদিকে, হাইলাকান্দি শহরের গান্ধী ঘাটে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলতে থাকে প্রতিমা নিরঞ্জন।
হাইলাকান্দি শহরে এবছর প্রায় ৪১টি সর্বজনীন পূজা হয়েছিল। তাছাড়া কয়েকটি পারিবারিক পূজাও ছিল। বরাবরের মত দিনের বেলাতেই বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক পূজা ও পারিবারিক পূজা ও পুলিশ প্রশাসনের পূজার প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পন্ন হয় সদর থানার বিপরীতে থাকা ধলেশ্বরী নদীর গান্ধী ঘাটে। পুরসভা পরিচালিত গান্ধীঘাটে জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর বিশাল মূর্তি স্থাপিত থাকায় স্থানটি গান্ধী ঘাট হিসেবে পরিচিত। আর এবছর প্রথম বারের মত গান্ধী ঘাটে হল রাবন দহন কার্যসূচী। আর এনিয়ে এখন পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা থাকলেও হাইলাকান্দিতে এর আগে রাবন দহন হয়েছে। কিন্তু পুরপতি কল্যাণ গোস্বামীর নেতৃত্বে এই প্রথম রাবন দহন!
এব্যাপারে কারু শিল্পী বুলু নাথ জানান, তিনি বিগত দিনে ১২ ফুট উচ্চতার এক রাবন তৈরি করলেও এবছর মাত্র দুইদিন সময়ের মধ্যে ধলেশ্বরী নদীর তীরে ৪২ ফুট উচ্চতার দশানন তৈরি করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরসপুর চা বাগান থেকে আগত রাম, সীতা, লক্ষণ, রাবন ও হনুমান জীর সাজে সজ্জিত অভিনেতারা এক সুন্দর প্রেক্ষাপট তৈরি করলে এক নাটকীয় পরিবেশের মধ্যে রাবন দহন অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া এই কার্যসূচীতে সামিল হন পুরপতি কল্যাণ গোস্বামী সহ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়, প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল রায়, ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্যিক অনুসূচিত জাতি মোর্চার সভানেত্রী মুন স্বর্ণকার, জেলা বিজেপি সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সভাপতি সুব্রত শর্মা মজুমদার সহ বেশ কয়েজন পুরসদস্যও। তবে রাবনের উদ্দেশ্যে শিল্পী ভূবন রবিদাস তীর নিক্ষেপ করলে ও রামের হাতের ধনুক নীয়ে বেশ উচ্ছ্বাসিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল রায় ও প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়। আর হনুমানের গদা নিয়ে জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে সরব ছিলেন পুরপতি কল্যাণ গোস্বামী সহ অন্যান্যরা।
অন্যদিকে, গান্ধীঘাটে এদিন সন্ধ্যায় কুচিলা অঞ্চল থেকে আগত নৃত্য শিল্পীরা ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করেন। প্রাক্তন জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত শর্মা মজুমদার ও মা দুর্গার বিসর্জ্জনের সঙ্গীত গাইলে অনেকেই ধামাইল নাচ পরিবেশন করেন। পাশাপাশি শিশু শিল্পীরা ও নৃত্য পরিবেশন করে বিসর্জন ঘাট কে মাতিয়ে তুলেন।মুন স্বর্ণকার এদিন রামের স্রুতি পরিবেশন করেন গঙ্গা আরতির পাশাপাশি।
এবছর পুরসভার পক্ষ থেকে গান্ধী ঘাটকে সাজিয়ে তোলা হয়। পুর কর্মচারী সহ সেচ্ছাসেবকরা এদিন লরি থেকে প্রতিমা নামিয়ে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত নিয়ে যান। জেলা প্রশাসনের পক্ষে সার্কল অফিসার কিলুনতেলে জেমি, বিডিও রঘুরাজ বৈদ্য উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া পুলিশ প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিক ও সিআরপিএফ সচেষ্ট ছিল। এদিন শহর এবং শহরতলীর প্রায় ৫২টি প্রতিমা এদিন রাতে বিসর্জন হয়।