পিএনসি, ইম্ফল।
বরাক তরঙ্গ, ২৬ নভেম্বর : ১৯৬৫ সালের ১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় নিরাপত্তা ও সীমান্ত রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বিএসএফ (সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী)। প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশজুড়ে হীরকজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে মণিপুরে একাধিক অনুপ্রেরণামূলক ও জনসম্পৃক্ততামূলক কার্যক্রম আয়োজিত হয়। রাজ্যে অবস্থিত বিএসএফের বিভিন্ন কমাণ্ড ইউনিট ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করা ও বাহিনী–জনসম্পর্ক আরও মজবুত করতে চিত্রকলা প্রতিযোগিতা, প্রেরণাদায়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং অস্ত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
২৫ নভেম্বর সমগ্র মণিপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে “জাতি প্রথম” শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ৩৫০ জনেরও বেশি ছাত্রছাত্রী এতে অংশগ্রহণ করে তাদের সৃজনশীলতা ও দেশপ্রেমকে ফুটিয়ে তোলে। শিক্ষক, গ্রামের প্রতিনিধি ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেন। প্রতিটি কেন্দ্রে সেরা প্রতিযোগীদের পুরস্কৃত করা হয় এবং অংশগ্রহণ বাড়াতে অনেক জায়গায় সান্ত্বনামূলক পুরস্কারও প্রদান করা হয়।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিটে বিএসএফের প্রশিক্ষণ, দায়িত্ব, স্কাইডাইভিং সক্ষমতা এবং বিএসএফের ক্যানাইন (কুকুর) দলের দক্ষতা নিয়ে প্রেরণাদায়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ২০২৫ সালে অপারেশন ‘সিন্দুর’-এ চরম সাহসিকতার পরিচয়ে বীর চক্র (মরণোত্তর) সম্মানপ্রাপ্ত সপ্তম ব্যাটালিয়নের শহিদ কনস্টেবল দীপক সিংগাখামের বীরত্বগাথা ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা হয়। তাঁর আত্মত্যাগ এবং পরবর্তীতে তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতার মনিপুর পুলিশে এএসআই হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ঘটনাও নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য উপস্থাপন করা হয়।

বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত অস্ত্র প্রদর্শনী ছাত্রছাত্রীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। তারা বিএসএফের ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র–সাঁজাদি কাছ থেকে দেখার পাশাপাশি বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ পায়। সিএপিএফে অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম, দায়িত্ব ও পেশাগত সুযোগ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিএসএফের কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানগুলোতে স্থানীয় নেতা, যুব ক্লাব, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষও অংশ নেন, যা সমাজ–বাহিনী সহযোগিতার এক দৃঢ় উদাহরণ সৃষ্টি করে।
সমস্ত অনুষ্ঠান সুচারুভাবে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন উপস্থিত বিএসএফ অফিসার, এসও এবং ওআর কর্মীরা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীরাও সার্বিক সহযোগিতা করেন, ফলে উদযাপনটি শৃঙ্খলাপূর্ণ ও অর্থবহ হয়ে ওঠে।
বিএসএফের এই হীরকজয়ন্তী উদযাপন কেবল সীমান্ত সুরক্ষার গুরুত্বই নয়, বরং জাতীয় চেতনাকে আরও সুদৃঢ় করা, সমাজের সঙ্গে সংযোগ গভীর করা এবং আগামী প্রজন্মকে দেশসেবায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।


