দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১০ ডিসেম্বর : অসমের ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত অসম আন্দোলনের সাহসী শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাঁদের অমর ত্যাগ স্মরণে শিলচরের ট্যাঙ্ক রোডে থাকা অগপর কাছাড় জেলা কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার প্রথমে অগপ কাছাড় জেলা কমিটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা অস্থায়ী শহিদ বেদিতে প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এদিন শহিদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ স্মরণ করে দাবি করা হয়, তাঁদের ত্যাগই আধুনিক অসমের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয় গড়ে তুলেছে।
সভায় অসম আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ও তাৎপর্য পুনরায় আলোচনা করা হয়।১৯৭৯ থেকে ১৯৮৫ এর মধ্যে ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে সংঘটিত এই গণআন্দোলনের মূল দাবি ছিল অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা তৈরী, তাদের বিতাড়ন, অসমিয়া ভাষা ও সংস্কৃতির সুরক্ষা, আদিবাসী সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকারের রক্ষা, সংবিধান ও ভূমি সংক্রান্ত অধিকার নিশ্চিত করা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ও সামগ্রিক সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি জাতীয় মনোযোগ আকর্ষণ।
অগপর কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি নজমুল হোসেন মজুমদার বলেন, অসম আন্দোলন আমাদের পূর্বের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে এবং ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তির মাধ্যমে শান্তি ও ঐক্যের পথ সুগম করেছে। এই ঐতিহাসিক অর্জনই আজকের অসম গণ পরিষদের ভিত্তি। অনুষ্ঠানে কাছাড় জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা শহিদদের আদর্শ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ হন এবং অসমের সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক স্বত্ব রক্ষায় নিবেদিত থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানটি একতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আসাম আন্দোলনের চেতনাকে ধরে রেখে ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি মণিতন সিংহ, সাধারণ সম্পাদক সুজিত শর্মা ও মোমিনুল হক লস্কর, দুই জেলা কমিটির উপ-সভাপতি আজিজুর রহমান মজুমদার ও হায়দার হোসেন বড়ভূইয়া, সহ-সম্পাদক দীপ ভট্টাচার্য, শিলচর বিধান পরিষদের উপ-সভাপতি রিয়াজুল বড়ভূইয়া, সংখ্যালঘু পরিষদের জেলা সভাপতি হায়দর হোসেন লস্কর, যুব পরিষদের জেলা সভাপতি রূপন মোদক, কার্যকরী সভাপতি চিত্তরঞ্জন সিংহ, উপ-সভাপতি আয়াজ উদ্দিন বড়ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক সহদেব পাল, কৃষক পরিষদের উপ-সভাপতি খালেদ মজুমদার, শিলচর কৃষক পরিষদের সভাপতি কুতুব উদ্দিন বড়ভূইয়া প্রমুখ।


