প্রথম স্ত্রীকে টাকা পাঠানোর দায়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতে খুন, ধলাই থেকে গ্রেফতার
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ১৪ অক্টোবর : উপার্জনের বড় অংশ প্রথম স্ত্রীকে পাঠানোর দায়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতে নৃশংস ভাবে খুন হতে হল এক ব্যক্তিকে। সতীনকে টাকা পাঠানো সহ্য করতে না পেরে স্বামীর গলা কেটে গায়ে এসিড ঢেলে নৃশংস ভাবে হত্যা করে পালায় দ্বিতীয় স্ত্রী। লোমহর্ষক কাণ্ডটি কেরলে ঘটলেও কাছাড়ের ধলাই অঞ্চল থেকে গ্রেফতার করে জায়দা খাতুনকে।
জানা যায়, ভয়ঙ্কর ঘটনাটি সংঘটি হয় ১ অক্টোবর কেরল রাজ্যের এর্নাকুলাম জেলায়। নগাঁও জেলার বাসিন্দা হত বাবুল হুসেনের ভাইয়ের দেওয়া তথ্য মতে প্রায় দুই বছর আগে ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গ্রামের ওপর এক দুই সন্তানের জননীকে নিয়ে পালিয়ে কেরল চলে যায় বাবুল। সেখানে একটি ভাড়া ঘরে দুই বছর থেকে বসবাস করছিলেন তারা। দুই মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রী জায়দা খাতুনকে রেখে নগাঁও বাড়িতে আসেন বাবুল। দিনকয়েক বড় বউয়ের সঙ্গে কাটিয়ে ফের কেরলে চলে যান তিনি। ১ অক্টোবর দ্বিতীয় স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসার কথা ছিল বাবুলের। একদিন আগে মালিকের কাছ থেকে পাওনা নেন স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু সপ্তাহদিন পর তালাবদ্ধ ঘর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে টের পেয়ে বাবুলের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন ঘর মালিক। মোবাইল সুইচ অফ থাকায় সন্দেহ হয় ঘর মালিকের। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। ছুটে আসে পুলিশ।
পুলিশ তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে মেঝেতে কাপড় দিয়ে ঢাকা গলাকাটা এসিড দিয়ে পোড়ানো বাবুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর কেরল পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বাবুলের স্ত্রীর মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে। এতে ধরা পড়ে বাবুলের স্ত্রী কাছাড় জেলার ধলাই থানা এলাকার ভাগাবাজার অঞ্চলে রয়েছেন। বাবুলের স্ত্রীকে ধরতে কেরল থেকে অসমের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় পুলিশের একটি দল। পুলিশ দল যোগাযোগ করে বাবুলের পরিবারের সঙ্গে। অসমে পৌঁছে কেরল পুলিশ বাবুলের বড় ভাই হোসেন আহমদকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছায় ধলাইতে। ধলাই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে থানা এলাকার ভাগাবাজার অঞ্চলের একটি ইটভাটা আত্মগোপন করে থাকা জায়দা খাতুনকে পাকড়াও করা হয় পুলিশ। জায়েদার সঙ্গে থাকা ছোট বোনকে নিয়ে কেরল থেকে ভাটার কাজে যোগ দেন।
পুলিশি জেরায় বাবুলকে হত্যার কথা স্বীকার করে জায়েদা। জয়েদা জানায় কিছুদিন থেকে উপার্জনের কিছু অংশ সতীন পাঠিয়ে দিতেন বাবুল। সেটা তার পছন্দ ছিল না। বাড়িতে ফিরলে সতীনের সঙ্গে থাকতে হবে তাকে। তাই বাবুলকে হত্যা করেছেন। পুলিশ জায়েদাকে গ্রেফতার করে এদিনই আদালতে তুলে। আদালতের অনুমতি নিয়ে জায়েদা বেগমকে নিয়ে কেরলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পুলিশ।