শিলচর সিভিলের তিনটি বিভাগে আজও নেই চিকিৎসক, ক্ষুব্ধ দাবি কমিটি

বরাক তরঙ্গ, ২১ জুন : শিলচর সিভিল হাসপাতালে আজ পর্যন্ত তিনটি বিভাগে চিকিৎসকের ব্যবস্থা না করায় ক্ষোভ ব্যক্ত করল শিলচর সিভিল হাসপাতাল আধুনিকীকরণ দাবি কমিটি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে  রাজ্যপাল সিভিল হাসপাতালে এসে তিনটি বিভাগ অর্থাৎ সার্জারি, চক্ষু এবং অর্থোপেডিক্স বিভাগে ডাক্তার না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছিলেন এই তিনটি বিভাগে চিকিৎসক নিয়োগের ব্যবস্থা করতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে কথা বলে খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। শুক্রবার শিলচর সিভিল হাসপাতাল আধুনিকীকরণ দাবি কমিটির পক্ষ থেকে দীপঙ্কর চন্দ, বিবেক আচার্য, হানিফ আহমেদ, সুরজিত সোম, খাদেজা বেগম লস্কর এবং কমল চক্রবর্তী ছয় জনের এক প্রতিনিধি দল এ ব্যাপারে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তার অবর্তমানে ডেপুটি সুপার ডাঃ অরুণ দেবনাথের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা তিনটি বিভাগে চিকিৎসক নিযুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জানান এখন পর্যন্ত কোনও বিভাগের চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। প্রতিনিধি দল এক প্রেস বিবৃতিতে একথা জানিয়েছেন।

তাঁরা বলেন, এই তিন বিভাগের চিকিৎসক নিয়োগ না হওয়ায় রোগীরা বাধ্য হয়ে মেডিক্যাল কলেজ বা অন্যত্র চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি করছেন। এই বিষয় নিয়ে আগেও কমিটি মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বারবার আবেদন করলেও সরকার নিশ্চুপ! আগামী দুই মাসের মধ্যে তিন বিভাগের চিকিৎসক নিয়োগ না করলে কমিটি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। প্রতিনিধিরা খবর নিয়ে জানেন যে “সিভিল হাসপাতাল ব্লাড ব্যাঙ্ক”–এ ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশনের সমস্ত যন্ত্রপাতি এসে গেছে। তবে লাইসেন্স পাওয়ার পরই কাজ শুরু করা যাবে। লাইসেন্সের জন্য ব্লাড ব্যাংক থেকে গুয়াহাটি ড্রাগস কন্ট্রোল কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ১৫ দিন আগে পাঠানো হয়। এখন গুয়াহাটি ড্রাগস কন্ট্রোল বিভাগ শিলচর ড্রাগস কন্ট্রোল অফিসে ইন্সপেকশন করে রিপোর্ট দেওয়ার পর গুয়াহাটি অফিস থেকে লাইসেন্স পাওয়ার জন্য নয়া দিল্লি ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেলে পাঠানো হবে।“। এ দিন কমিটির পক্ষ থেকে গুয়াহাটি ড্রাগস কন্ট্রোল বিভাগে ফোনে যোগাযোগ করলে বিভাগের আধিকারিক কে কলিতা ফোনে জানান, আজকেই তারা ডাকযোগে কাগজপত্র শিলচর ড্রাগস কন্ট্রোল অফিসে পাঠিয়ে দেবেন। কমিটি মনে করে আগামী আগস্ট মাসেই ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন চালু হয়ে যাবে। এই কম্পোনেন্ট চালু হলে আন্দোলনের একটি বিরাট সাফল্য অর্জিত হবে। প্রতিনিধিরা “শিলচর সিভিল হাসপাতাল আধুনিকীকরণ দাবি কমিটি” গঠন হওয়ার পর থেকেই ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন চালু করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তাঁরা এও বলন, সিভিল হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট খোলার জন্য গুয়াহাটি পূর্ত বিভাগ টেন্ডার আহ্বান করার পর সিভিল হাসপাতালের ভেতরের জায়গা খালি করে দেওয়ার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল বেশ কয়েকমাস আগে। টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি। কাজ শুরু করার আগে জায়গা খালি করতেও বলা হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই জায়গা খালি করা হয়েছিল। কিন্তু কী কারণে কাজ এখনও শুরু হয়নি বা কবে শুরু হবে ৫০ বিশিষ্ট শয্যার কাজ, সেই বিষয়ে জয়েন্ট ডিরেক্টরকে ফোনে জিগ্যেস করলে কোনও সদুত্তর মেলেনি। কমিটি চাইছে এই কাজ অতিসত্বর শুরু হোক এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাক্তার ও মেডিক্যাল স্টাফ নিয়োগ করা হোক। ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট সিভিল হাসপাতাল আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে জাইকা মারফত টপলোজিক্যা অ্যান্ড জিও সার্ভে হওয়ার পর ডিপিআর তৈরি করে টেন্ডার আহ্বান করার কথা। সেই বিষয় নিয়ে ডেপুটি সুপার বা জয়েন্ট ডিরেক্টর সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি। সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে আছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরু না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে কমিটি এ কথা জানিয়েদেন।

Author

Spread the News