৯ ডিসেম্বর : বাবার মৃতদেহ আগলে দিনের পর দিন ঘরেই ছিলেন মেয়ে। অবশেষে পুলিশ সোমবার গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে। মা’কে উদ্ধার করা হয় খাটের তলা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায়। পশ্চিমবঙ্গের কসবায় এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কসবার বোসপুকুরে একটি বাড়িতে মেয়ে সম্প্রীতি সেন (২৭) ও স্ত্রী অর্চনা সেনকে নিয়ে থাকতেন সুমিত সেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, পরিবারের তিনজনই গত বেশ কিছু সময় ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। বাড়ি থেকেও বেশি বেরোতেন না। কিন্তু কয়েকদিন ধরে তাঁদের বাড়ির কাউকেই দেখা যাচ্ছিল না। সুমিত সেনের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো কারও শরীর খারাপ, তাই বাড়িতেই রয়েছেন। কিন্তু এক-দু’দিন পেরিয়ে গেলে সন্দেহ হয়। এরপর তাঁদের এক আত্মীয়কে জানানো হয়।
ওই আত্মীয় ফোন করে তাঁদের খোঁজ নেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রীতি ফোন ধরে জানাতেন বাবা-মা ভাল আছে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বারবার এড়িয়ে যেতেন।
সোমবার সুমিত সেনের প্রতিবেশীদের নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান ওই আত্মীয়। দেখেন, ঘর ভিতর থেকে বন্ধ। কিন্তু অনেকবার ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। খবর দেওয়া হয় কসবা থানায়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। দেখা যায়, ঘরের মাঝে পড়ে রয়েছে প্রৌঢ়ের পচাগলা দেহ। পাশেই বসেছিলেন তাঁর মেয়ে। অন্যদিকে, খাটের তলায় বস্তা থেকে মৃতের স্ত্রীকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। কী কারণে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। অনুমান, অসুস্থতার জেরেই সুমিত সেনের মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যাবে না। কসবা থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
সম্প্রীতির আচরণও পুলিশকে চিন্তায় ফেলেছে। ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না। তাঁর মানসিক অবস্থারও চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


