বরাক তরঙ্গ, ২৭ নভেম্বর : দীর্ঘ আলোচনা ও তীব্র বিতর্কের পর অসম বিধানসভায় পাস হল বহু-বিবাহ প্রতিরোধ বিল। শীতকালীন অধিবেশনে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিলটি উত্থাপন করেন এবং পরে সংক্ষিপ্ত ভাষণে এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই না আমার মেয়ে ২১ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক আর অন্য কারও মেয়ে ১৫ বছর বয়সে মা হয়ে যাক।” তিনি জানান, অসমে বহু বিবাহ প্রায় বন্ধ হলেও এখনো সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব বজায় রয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ যে বিলটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে তার জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, এটি “নিপীড়িত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সামাজিক সংস্কারের উদ্যোগ”। শর্মা বলেন, বিধানে যারা বিরোধিতা করেছেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম পুরুষ বিধায়ক। তিনি অভিযোগ করেন, “৬৫-৭০ বছর বয়সী পুরুষরা ১৫-১৬ বছর বয়সী মেয়েদের বিবাহ দিচ্ছেন।” তবে তিনি স্পষ্ট জানান, বহু বিবাহ শুধু মুসলিম সমাজেই নয়—হিন্দু ধর্মসহ সকল সম্প্রদায়ে বন্ধ করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকায় আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা সীমিত। BTR সহ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলগুলোকে নিজেদের আইনে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ২০২৩ সালের ১২ মে গঠিত উচ্চ আদালতের কমিটি—যারা জনমত নিয়েছিল—তাদের কাছে বহু বিবাহের পক্ষে মাত্র দু’টি চিঠি আসে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যে শর্মা বলেন, বিশ্বে বহু ইসলামি দেশ বহু বিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। তিনি দাবি করেন, কোনও নারীই স্বামীকে একাধিক বিবাহ করতে চান না এবং বহু বিবাহ “আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়ার শামিল”। এছাড়া তিনি বলেন, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ ইসলামে সমর্থনযোগ্য নয়। তিনি আরও মন্তব্য করেন, “যদি স্ত্রী অসুস্থ হন বা সন্তান জন্ম দিতে না পারেন, স্বামীর কর্তব্য তাকে সেবা করা—বিয়েকে বাজারের লেনদেন হিসেবে দেখা যায় না।”
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিধানসভায় ঘোষণা করেন যে অসমে ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC) প্রয়োগ করা হবে। তিনি বলেন, “আবার মুখ্যমন্ত্রী হলে প্রথম অধিবেশনেই UCC আনব। মহিলাদের ন্যূনতম বিবাহের বয়স ২১ বছরও করা হবে।”


