ত্রিপুরা নির্বাচন : বুথে ভোটার ৪৫১, ভোট পড়েছে ৪৯২টি!
২৪ এপ্রিল : মোট ভোটারের চেয়েও ভোট পড়েছে বেশি! কোথাও ১০৯ শতাংশ, কোথাও ১০৫ শতাংশ, আবার কোথাও ১০০ শতাংশের বেশি! ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রের ভোটে প্রদত্ত ভোটের যে পরিসংখ্যান খোদ নির্বাচন দপ্তর প্রকাশ করেছে, তা দেখে তাজ্জব সাধারণ মানুষ। অবাধে ভোট দিয়ে গেছে ভূতেরা! কমিশনের হিসেবেই একাধিক ক্ষেত্রে এই রকম অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডকীর্তির প্রমাণ সুস্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও এই ধরনের ঘটনা বেরিয়ে এসেছিল। ত্রিপুরায় ইন্ডিয়া ব্লকের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরি এবারের ভোটের প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান উল্লেখ করে ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে গোটা পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রের ভোট এবং একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন সম্পূর্ণ বাতিল করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে আবার ভোট নেওয়ার দাবি করেছেন।
ভোটের দুপুরেই ইন্ডিয়া ব্লকের এক প্রতিনিধিদল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক পুনিত আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করে শাসক দল বিজেপি-র বিরুদ্ধে ব্যাপক রিগিং, বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধাদানের অভিযোগ করেছিলেন। উল্টো দিকে বিজেপির এক প্রতিনিধিদলও সিইও-র সঙ্গে দেখা করে বিরোধীদের অভিযোগ “মিথ্যা ও ভিত্তিহীন” বলে দাবি করেছিল। ভোটের পর সেদিন সন্ধ্যায় ইন্ডিয়া ব্লক গোটা নির্বাচনকে প্রহসন আখ্যায়িত করে ফের ভোটের দাবি করেছিল।
কমিশনের পরিসংখ্যানই বলছে, মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৪৪ নম্বর বুথে মোট ভোটার ছিলেন ৫৪৫ জন। কিন্তু সব মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৫৭৪! ভোটের হার ১০৫.৩ শতাংশ! তেমনি খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৪৪ নম্বর বুথে ১২৯০ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১২৯২ জন! ১০০.১৫ শতাংশ! মোহনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৮ নম্বর বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪৫১ হলেও ভোট পড়েছে ৪৯২টি! ১০৯ শতাংশের বেশি! খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ২৫ নম্বর বুথে এলাকায় অনুপস্থিত এবং মৃতরাও ভোট দিয়ে গেছেন! তাতে ভোটের হার হয়েছে প্রায় ৯৯ শতাংশ! এই রকম ছবি আরও অনেক ভোটকেন্দ্রে। বিজেপির বিরুদ্ধে বুথ দখল ও অবাধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ এই সব পরিসংখ্যান থেকেও প্রমাণিত। একথা উল্লেখ করে গণতন্ত্রের পবিত্রতা রক্ষায় ত্রিপুরায় ১৯ এপ্রিলের পুরো ভোট বাতিল করে অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে নতুন করে ভোটগ্রহণের দাবি করেছেন জিতেন। খবর : আজকাল ডট ইন।