তিন বছরের শিশুকে জীবন্ত পুঁতে দিল মদ্যপ বাবা, উদ্ধার নিথর দেহ

বরাক তরঙ্গ, ১৭ জানুয়ারি : জীবন্ত ছেলেকে মাটি চাপা দিল এক পাষণ্ড সৎ বাবা। ঘটনা ত্রিপুরা রাজ্যের বোধজং নগর থানার অন্তর্গত বলদাখাল পাল পাড়া এলাকায়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর মাটির নিচ থেকে উদ্ধার তিন বছর বয়সী সায়ন দাসের নিথর মৃতদেহ। অভিযুক্ত সৎ বাবা শ্যামল দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য। উল্লেখ্য, বোধজং নগর থানার অন্তর্গত বলদাখাল পাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামল দাস। প্রথম স্ত্রীকে রেখে সে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিশালগড়ের এনসি নগর এলাকার সরস্বতী সরকারকে বিয়ে করে শ্যামল দাস। সরস্বতী সরকারেরও আগে বিয়ে হয়েছিল। সরস্বতী সরকারের ছেলে সায়ন। সরস্বতীকে বিয়ের পর তার ছেলে সায়নকেও নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে শ্যামল দাস। দুই থেকে তিন মাস পূর্বে শ্যামল দাস সরস্বতী ও তার ছেলেকে বলদাখাল পাল পাড়া এলাকায় নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে শ্যামল। তারপর শ্যামল দাসের প্রথম স্ত্রী বাপের বাড়িতে চলে যায় সন্তানকে নিয়ে। এরই মধ্যে শ্যামল দাস দ্বিতীয় স্ত্রী সরস্বতীর উপর নির্যাতন শুরু করে। প্রায় সময় মদমত্ত অবস্থায় বাড়িতে গিয়ে সরস্বতীকে মারধর করে।

সরস্বতী সরকারের বক্তব্য সোমবার রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় শ্যামল দাস বাড়িতে গিয়ে সায়নের উপর নির্যাতন শুরু করে। একটা সময় সায়ন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন শ্যামল দাস সায়নকে বাড়ির অদূরে নিয়ে গিয়ে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। পাশাপাশি সরস্বতীকে হুমকি দেয় ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানানো হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। তাই সরস্বতী ঘটনার বিষয়ে কাউকে অবগত করেনি রাতের বেলা। মঙ্গলবার সরস্বতী ঘটনার বিষয়ে পাড়া প্রতিবেশীদের অবগত করেন।

তিন বছরের শিশুকে জীবন্ত পুঁতে দিল মদ্যপ বাবা, উদ্ধার নিথর দেহ

মঙ্গলবার সকালে মৃত সায়নের জন্মদাত্রী মা পাড়া প্রতিবেশীদের ঘটনার বিষয়ে জানানোর পর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বোধজং নগর থানার পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পারমিতা পাণ্ডে। শুরু হয় মৃত সায়নের দেহ উদ্ধারের জন্য দৌড়ঝাঁপ। দীর্ঘ প্রায় তিন ঘণ্টা প্রচেষ্টা চালানোর পর পুলিশ শ্যামল দাসের বাড়ির অদূরে ডোবার মাটির নিচ থেকে সায়নের নিথর মৃতদেহ উদ্ধার করে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পারমিতা পাণ্ডে জানান, অভিযুক্ত শ্যামল দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। সায়নের মা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মৃত সায়নের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের লোকজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

Author

Spread the News