দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৩ ডিসেম্বর : কাছাড়ি রাজা গোবিন্দ চন্দ্র নারায়ণের শাসনকালে ১৮৩০-১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত ঐতিহাসিক রাজপথ আজও কাগজে রাজপথের নাম ধরে থাকলেও বাস্তবে জরাজীর্ণ ও বেহাল অবস্থায় রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে একের পর এক সরকার বদলালেও এই প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা রাস্তাটির কোনও সংস্কার হয়নি। রংপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চতুর্থ খণ্ডের প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বর্ষাকালে রাস্তাটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, যাতায়াতকারীদের জীবনঝুঁকি নিতে হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াত বা অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভবের মতো বিপজ্জনক হয়ে পড়ে।
এছাড়া, রাস্তার সংলগ্ন বরাক নদীর ভাঙন প্রতিরোধের কাজ অতীতে পরিকল্পনাহীনভাবে করা হয়েছে। ফলে প্রতি বছর বন্যায় পাশের বসতঘরগুলোতে জল ঢুকে বাড়ির পরিকাঠামো ধ্বংস হচ্ছে। রাস্তায় কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা আরও জটিলতর হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয়রা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে বলেন, “এই বেহাল অবস্থায় এটাকে রাজপথ নয়, গাধার পথ বলে নামকরণ করাই উচিত।” তারা মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, সাংসদ পরিমল শুক্লবৈদ্য, বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম এবং কাছাড়ের জেলা কমিশনার মৃদুল যাদবকে সতর্ক করে বলেন, অতিসত্ত্বর সঠিক পরিকল্পনায় রাস্তা সংস্কার ও নদীভাঙন প্রতিরোধের কাজ না করলে বৃহত্তর রংপুর চতুর্থ খণ্ডের প্রায় ২ হাজার বাসিন্দা গণতান্ত্রিকভাবে ভোট বয়কট করবেন।

এদিন রবিজুল আলি লস্কর, টিপ্পন বড়লস্কর, তজনা উদ্দিন লস্কর, সেলিম উদ্দিন বড়লস্কর, রফিক উদ্দিন বড়লস্কর, হায়দর লস্কর, সোয়াইব মোহাম্মদ লস্কর, মনসুর বড়লস্কর, সেলিম লস্কর, রফিক লস্কর, রিজু লস্কর, কাবুল মজুমদার, সেবুল লস্কর প্রমুখ স্থানীয় নেতাকর্মীরা সক্রিয়। তারা আরও জানান, দীর্ঘদিনের অবহেলায় রাস্তা ও নদীভাঙনের মেরামতের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামী দিনগুলোতে আন্দোলনের দিকে যাবেন বলে সহ এই ঐতিহাসিক রাজপথটি শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, কাছাড়ের ইতিহাসের একটি অংশ। সরকারের তৎপরতা না দেখালে গণতান্ত্রিক ভোট বয়কট করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।


