কৈলাসহরে একটি ডেন্টাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি বিধায়কের
পিএনসি, ধর্মনগর।
বরাক তরঙ্গ, ৮ সেপ্টেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে পাশে রেখে কৈলাসহরে একটি ডেন্টাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা। শনিবার কৈলাশহর কলেজের এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা এই দাবি জানান। বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে রক্তদান শিবির ও ফটো গ্যালারির উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী টিংকু রায়, বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা, কৈলাশ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান গিরিজানন্দ মহারাজ, কৈলাশহর পুর পরিষদের চেয়ারপারসন চপলারানি দেবরায় প্রাক্তন বিধায়ক মবস্বর আলি, রাজ্য সরকারের সচিব রাভেল কুমার, উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঞ্চালক অনিমেষ দেববর্মা, উনকোটির জেলা আয়ুক্ত দিলীপ চাকমা পুলিশ সুপার কান্ত জাঙ্গির, কৈলাশহর রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের, অধ্যক্ষ পিনাকী পালসহ আরও অনেকে। কলেজের অধ্যক্ষ ড. আনুস্তানে স্বাগত বক্তব্য দেন পিনাকী পাল। অনুষ্ঠান মঞ্চে কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, বর্তমান অধ্যক্ষ ও প্রাক্তন অধ্যাপকদের সম্মাননা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।
অনুষ্ঠান মঞ্চেও থিম সং পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বলেন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং শিক্ষার প্রসারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা। আর বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার কাছে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিশেষ করে কৈলাসহরে ডেন্টাল কলেজ করার দাবি জানান। বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা একটি উদাহরণ দিয়েছেন যে ভারতের পন্ডিচেরি রাজ্যের জনসংখ্যা নয় লাখ এবং সেই নয় লাখ রাজ্যে আটটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তাহলে ত্রিপুরার প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ করা যেতে পারে।
এছাড়া বীরজিৎ সিনহা আরো বলেন, সাধারণ মানুষের অনুদানে কৈলাশহরে কলেজ দক্ষিণ ও মুস্তি বিকাশ করা হয়েছে। কলেজটি পরে রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করে। কৈলাশহর কলেজে প্রচুর জায়গা ছিল। তৎকালীন বাম সরকারের আমলে কলেজের অনেক জমি অবৈধভাবে বিভিন্ন দপ্তরকে দিয়ে দখল করে রাখা হয়েছিল। কৈলাশহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি কলেজের পুরো জায়গা পুনরুদ্ধার করে কৈলাশহর কলেজকে কেন্দ্র করে কৈলাশহরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। অনুস্থান মঞ্চে বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন যে ত্রিপুরা রাজ্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কোনো আপস করা হবে না। বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বক্তৃতায় বলেছিলেন যে অতি শীঘ্রই বেদখল হওয়া কলেজ চত্বর খালি করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা নেবেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বক্তব্য দিতে গিয়ে একপর্যায়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার ভাই মাজদা এই কৈলাশহর কলেজে পড়ে। তাই এই কলেজের প্রতি তার বাড়তি টান রয়েছে। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা সেদিন ছবির গ্যালারির প্রশংসা করেছিলেন। আনুস্তানে কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কৈলাশহর কলেজের পর মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা রাজ্যের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে বড় বাজেটের গণেশ পুজোয় যোগ দেন। কৈলাশহরের পানিচৌকি বাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে আয়োজিত গণেশ পূজা এ বছর দশ বছরে পদার্পণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা আট দিনের গণেশ পূজা প্রাঙ্গণে এসে গণেশ ঠাকুরকে প্রণাম জানান।
পূজা মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়, কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপারসন চপলারানি দেবরায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিলীপ চাকমা, পুলিশ সুপার কান্ত জাঙ্গীর প্রমুখ। গণেশ পূজা কমিটির পক্ষ থেকে অসীম পাল, প্রান্তোষ রায় এবং দীপক ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে পুজো মণ্ডপে স্বাগত জানান এবং মুখ্যমন্ত্রীকে একটি রূপার গণেশ মূর্তি উপহার দেন। পুজো মণ্ডপে কৈলাসহর বণিক সমিতির তরফে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ দান করেছেন ব্যবসায়ীরা। পূজা মণ্ডপে উপস্থিত দর্শনার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ও মন্ত্রী টিংকু রায়।