পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে পরাজিত বিজেপি কর্মী, শোক
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ৪ মে : পাঁচ দিন জীবন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন ভারতীয় জনতা পার্টির একনিষ্ঠ কর্মী দেব কুমার রায়। পঞ্চায়েতের নির্বাচনে ছোট বোন সাধনা রায়ের হয়ে প্রচারে গিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ছিলেন দেবকুমার রায়। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশে চান্নীঘাট-হাওয়াইথাং সড়কে দাঁড়িয়ে নির্বাচনী প্রচার করছিলেন দেবকুমার রায়। ঠিক সে সময়ে ভাগাবাজারের দিক থেকে হাওয়াইথাং অভিমুখে যাওয়া একটি দ্রুতগতির অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দেয়, অটোর ধাক্কায় সড়কের উপর ছিটকে পড়েন দেবকুমার। তাঁকে ধাক্কা দিয়ে অটো সড়কের উপর পাল্টি খেয়ে পড়ে যায়। এতে আহত হন অটো চালকও। ঘটনাস্থলে স্থানীয় মানুষ তাৎক্ষণিক আহত দেবকুমার রায় ও অটো চালককে উদ্ধার করে ধলাই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাঠান।আঘাত গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর উভয়কে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পাঁচ দিন দেবকুমার শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে থাকাকালীন শনিবার রাত দু’টার দিকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছাতেই গোটা এলাকায় সুখের ছায়া নেমে আসে।
বছর ৪৬ এর দেবকুমার রায় দীর্ঘ বছর ধরে চান্নীঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই নম্বর বুথের ভারতীয় জনতা পার্টির বুথ কমিটির সম্পাদ হিসেবে সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলিয়েছেন। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর ছোট বোন সাধনা রায় ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হয়ে চান্নীঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই নম্বর গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন।
মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারকে সান্তনা দিতে প্রয়াত দেব কুমার রায়ের বাড়িতে পৌঁছান ধলাই এর বিধায়ক নীহাররঞ্জন দাস, সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা। বিধায়ক নীহাররঞ্জন দাস সহ ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মকর্তারা সব সময় প্রয়াত দেব কুমার এর পরিবারের পাশে থেকে সব রকমের সহায়তা করবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। নীহাররঞ্জন দাস উল্লেখ করেন দেব কুমার রায় দীর্ঘ বছর ধরে ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। আর অকাল মৃত্যুতে দল একজন দক্ষ কার্যকর্তাকে হারালো। তিনি তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরণোত্তর পরীক্ষার পর রবিবার বিকেল পাঁচটার দিকে প্রয়াতের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়। মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী সন্তান সহ আত্মীয় পরিজনরা। প্রয়াত দেবকুমার রেখে গেছেন স্ত্রী, নয় বছরের এক শিশু কন্যা, অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণমুগ্ধদোপর।
