শিলচর-আইজল রোডের নরসিংহপুরে থৈ থৈ অবস্থা, জনদুর্ভোগ চরমে

রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ২৩ জুন : কেন্দ্রীয় সরকারের ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে দেশজুড়ে সড়ক নির্মাণ কাজ চললেও, এর বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। সেই আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণ করে বর্ষার শুরুতেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বহু প্রতীক্ষিত শিলচর-আইজল জাতীয় সড়কের নরসিংহপুর এলাকার অংশটি। দূর থেকে দেখলে এটিকে চাষের জমি বলে ভুল করা স্বাভাবিক, যেখানে হালচাষ শেষ এবং ধানের চারা রোপণের অপেক্ষা! কিন্তু কাছে গেলেই স্পষ্ট হয় এটি কোনও কৃষিক্ষেত্র নয়, বরং এক ভয়াবহ বেহাল রাস্তার চিত্র। নরসিংহপুরের এই দৃশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার এই মারাত্মক অবস্থার প্রতি প্রশাসনের কোনও নজর নেই। বর্ষার জলে রাস্তাটি পুরোপুরি কাদা-মাটিতে ভরে গেছে। বড় বড় গর্তে জমে থাকা জল এবং কাদা মিলে এটি এখন কার্যত একটি ধানক্ষেতের রূপ নিয়েছে, যা চলাচলকারীদের জন্য নরক যন্ত্রণার সমান।

শিলচর-আইজল রোডের নরসিংহপুরে থৈ থৈ অবস্থা, জনদুর্ভোগ চরমে

এই বেহাল রাস্তার কারণে নিত্যযাত্রী, স্কুল পড়ুয়া এবং রোগী বহনকারী গাড়িসহ সকল প্রকার যানবাহনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছোট যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে এবং পণ্যবাহী লরি আটকে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি করছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ব্যবসা-বাণিজ্যেও পড়েছে এর তীব্র বিরূপ প্রভাব।

একজন স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আক্ষেপ করে বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে এখন এই রাস্তায় ট্রাক বা গাড়ি নয়, বরং লাঙল দিয়ে হাল চালাতে হবে।” ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে রাস্তা নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে কাজের গুণগত মান এবং পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা—সবকিছুতেই শুরু থেকেই একাধিকবার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। লায়লাপুর থেকে সোনাবাড়িঘাট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হওয়া ভয়ংকর গর্তগুলো সেই অভিযোগকেই আরও প্রকট করে তুলছে।

শিলচর-আইজল রোডের নরসিংহপুরে থৈ থৈ অবস্থা, জনদুর্ভোগ চরমে

নরসিংহপুর এলাকার বাসিন্দারা অবিলম্বে এই গুরুত্বপূর্ণ সংযোগপথের দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। দেশের এক প্রান্তকে অন্য প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হওয়া এই প্রকল্প যদি এমন অব্যবস্থাপনার শিকার হয়, তবে তা জনজীবনে চরম দুর্ভোগ বয়ে আনবে এবং সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যকে ব্যাহত করবে।

Author

Spread the News