পুকুরের পড়া তফজ্জুল আর ধর্ষক তফজ্জুল এক নন দাবি, ৪ নভেম্বর পরবর্তী শুনানি
ধিং ধর্ষণ মামলায় নতুন মোড়
বরাক তরঙ্গ, ১৭ সেপ্টেম্বর : ধিং ধর্ষণ মামলায় নতুন মোড় নিল। অসম পুলিশের আরেকটি জঘন্য দিক ফাঁস করেছে গুয়াহাটি হাইকোর্ট।
পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় পুকুরের জলে পড়ে মৃত্যু হওয়া তফজ্জুল ধর্ষক নন। ধিং ধর্ষণ মামলায় পাল্টে গেছে চিত্র। পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া তফজ্জুল ইসলাম ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি নন। পুলিশ হেফাজতে পুকুরে পড়ে যাওয়া প্রধান আসামি তফাজ্জুল ইসলাম ও তফজ্জুল ইসলামকে দুজন ভিন্ন ব্যক্তি বলে দাবি করা হয়। গুয়াহাটি হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে দায়ের করা একটি আবেদনের শুনানির পর নিচ্ছে নয়া মোড়।
উল্লেখ্য, ধিং ধর্ষণ কাণ্ডের পর তফজ্জুল ইসলাম নামে এক যুবকের আটক করে পুলিশ। তফজ্জুল ইসলাম (২৮) পুলিশ হেফাজতে হাতকড়া থাকা অবস্থায় পুকুরে ঝাঁপ দেয় এমনটাই দাবি করে পুলিশ। রাজ্যের সচেতন মহল ঘটনাটিকে পুলিশের বেআইনি এনকাউন্টারের নতুন কৌশল হিসেবে আখ্যা দেয়।
পুলিশ হেফাজতে তফাজ্জল ইসলামের মৃত্যুর পর, তার বাবা গুয়াহাটি হাইকোর্টে একটি মামলা করেছিলেন এবং দাবি করেন তফজ্জুল ইসলাম ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত একই যুবক নয়। এই আবেদনের ভিত্তিতে রুজু করা ডব্লুপি(চি) ৪৬৬২/২০২৪ নম্বরের মামলার সোমবার গুয়াহাটি হাইকোর্টের বিচারপতি মানস রঞ্জন পাঠক এবং সৌমিত্র শইকিয়ার একটি বেঞ্চ অসম সরকারকে তার অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য একটি নোটিশ জারি করেছে।
তফজ্জুল ইসলামের বাবা জুনায়েদ খালিদের করা আবেদনে বলা হয়, ধিংয়ের ঘটনায় তফজ্জুল ইসলাম নামে এক যুবকের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পুলিশ ওই সময় অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ করে।

তবে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া এবং পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় রহস্যজনকভাবে পুকুরে পড়ে যাওয়া তফজ্জুল ইসলাম এবং গণমাধ্যমে আসামি তফজ্জুল ইসলাম একই ব্যক্তি নন। পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া তফাজ্জল ইসলাম ধিং ধর্ষণ মামলায় জড়িত ছিল এমন কোনও প্রমাণ নেই।
ভুক্তভোগী আইনের গণ্ডির ভেতরে ওই যুবক নিজেকে ধর্ষক বলে পরিচয় দেননি। অন্য কোনও সাক্ষী নিহতকে আসামি হিসেবে শনাক্ত করতে পারেনি। তফজ্জুলকে আসামি করার জন্য কোনও আইনি ডিএনএ পরীক্ষা হয়নি। যুবকের গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ পরিবারের কাছে গ্রেফতারি মেমো জারি করেনি। নিহতের পরিবার এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পায়নি। তফজ্জুলকে গ্রেফতারের সময় পুলিশ আদালতের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশ অমান্য করেছে বলেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

তাকে ভোর ৫টায় গ্রেফতার করা হয় এবং রাত পর্যন্ত তার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়নি। ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন নির্যাতিতার বাবা তার ছেলের মৃত্যুর জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছেন। হাইকোর্ট অসম সরকার, স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, নগাঁও জেলা কমিশনার, নগাঁও পুলিশ সুপার এবং ধিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নোটিশ পাঠিয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বরে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গুয়াহাটি হাইকোর্টে শুনানির পর ধিং ধর্ষণ মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে।