নির্বাচনী প্রচারে বরাকের দু’টি আসনে কোন খামতি রাখছে না এসইউসিআই

আশু চৌধুরী, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৩ এপ্রিল : সীমিত সংখ্যক কর্মী। এরমধ্যে নির্বাচন কমিশনের নানা নিয়ম। তারপরও নির্বাচনী প্রচারে কোন খামতি রাখছে না বরাকের দু’টি আসনে লড়াই করা একমাত্র বামপন্থী দল এসইউসিআই (সি)। দলের গণ সংগঠনগুলো ভাগ করে গোটা উপত্যকায় প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মীরা ঘরে ঘরে প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন। আর কৃষক, শ্রমিক ও দলীয় কর্মীরা প্রতিটি অঞ্চলে নির্বাচনী সভা করে যাচ্ছেন। নেই কোন গাল ভরা প্রতিশ্রুতি, নেই ভোটের হিসেবও। বক্তারা পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ কী ভাবে শোষিত হচ্ছেন তা প্রতিটি সভায় তুলে ধরছেন। আর এই শোষণ থেকে মুক্তি পেতে নির্বাচন কোন বিষয় নয় সেকথা বুঝিয়ে বলছেন একমাত্র পথ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে পুঁজিবাদ বিরোধী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব।

এ দিকে, শিলচর লোকসভা আসনে প্রভাসচন্দ্র সরকার ও করিমগঞ্জ কেন্দ্রে প্রজ্জ্বল সুদীপ দেব প্রার্থী করেছে এই দল। দু’জনই দলের সর্বক্ষণ কর্মী। শোষনমুক্ত সমাজ গঠন ও বিপ্লবের বলে বিশ্বাস রেখে বছরের পর বছর দলীয় কাজ করে যাচ্ছেন দুই প্রার্থী সহ দলীয় কর্মকর্তারা। নির্বাচনে নেই কারও সঙ্গে জোট বন্ধন। নির্বাচনী মাঠে একাই সংগ্রাম করছে এসইউসিআই।  সমালোচনায় কংগ্রেস,বিজেপি, তৃণমূল, ইউডিএফের সঙ্গে বাদ পড়ছে না বামদলগুলোও।

বক্তারা বক্তব্যে ফুটে উঠছে চাল, ডাল, তেল, পেট্রোল, ডিজেল, ওষুধপত্র, রন্ধন গ্যাস, বিদ্যুৎ মাসুল সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধির কথা। এ ছাড়া কেন্দ্রে ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন সরকারগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, ব্যাঙ্ক, বীমা, রেল বিভাগ, খনি, বিমানবন্দর, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পদ্যোগগুলো দেশ ও বিদেশের একচেটিয়া পুঁজিপতিদের সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের লালসার চরিতার্থ করতে এই ক্ষেত্রগুলো তুলে দিচ্ছে। এভানে জানা অজানা বিষয়গুলো মানা তথ্য দিয়ে জনসমক্ষে তুলে ধরছেন দাবি করা প্রকৃত বামপন্থী নেতারা।

আবার আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখতে শোনা যায়। সস্তা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ও বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার চেষ্টা চালাচ্ছে বাকি সব-কটি দল এমনও বয়ান তাঁদের। বলছেন নির্বাচন হচ্ছে নীতির লড়াই। কিন্তু বাস্তবে কোন নীতিই দেখছে না এই দল। অসমের জ্বলন্ত সমস্যার কথা তুলে ধরে বলছেন এনআরসির মধ্যে দিয়ে ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত শুরু করেছিল কংগ্রেস সরকার, বিজেপি সরকার সেই প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করে ১৯ লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষের নাগরিকত্বকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই অসহায় মানুষগুলো আধার কার্ড সহ বিভিন্ন নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এখন জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে শরণার্থী সমস্যার সমাধান না করে এবং বাংলাদেশের বসবাসের প্রমাণপত্র দাখিল করার শর্ত চাপিয়ে দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি জটিল করে তোলা হয়েছে বলেও জানাচ্ছেন।

দলের শ্রমিক ইউনিয়ন বিভিন্ন সময়ে জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে অন্যান্য বামপন্থী দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়াজ তুলে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক সংস্থা গুলোকে নিয়ে নানা সময় আন্দোলন করতেও দেখা যায়। তাই তাদের পক্ষ থেকে কতটুকু ভোট পায় এসইউসিআই তা দেখার বিষয়। কেননা বরাকের দু’টি আসনে অন্য কোন বামদল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। অবশ্যই সেজন্য ৪ জুন অবদি অপেক্ষা করতে হবে।

Author

Spread the News