করিমগঞ্জে এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) র প্রার্থীর মনোনয়ন জমা
বরাক তরঙ্গ, ৩০ মার্চ : করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের মনোনীত প্রার্থী প্রজ্জ্বল সুদীপ দেব মনোনয়ন জমা দিলেন। শনিবার করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারের কাছে প্রথম প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের করিমগঞ্জ জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য কমিটির সদস্য অরুণাংশু ভট্টাচার্য, করিমগঞ্জ জেলা কমিটির প্রবীণ সদস্য পরিমল চক্রবর্তী, হাইলাকান্দি জেলা কমিটির সদস্য সুশীল পাল ও দলের সদস্য অজয় চৌধুরী। তার আগে বেলা ১ টায় দলের মেন রোডে থাকা জেলা কার্যালয় থেকে সুসজ্জিত মিছিল শহরের রাজপথ শ্লোগানে মুখরিত করে জেলা আয়ুক্তের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন দলের করিমগঞ্জ জেলা কমিটির প্রবীণ সদস্য তুষার দাস, বিষ্ণু দত্ত পুরকায়স্থ, বিনয় হালাম, আব্দুর রহিম, সুজিত কুমার পাল, মৃণাল সিনহা প্রমুখ।
দলের মনোনীত প্রার্থী প্রজ্জ্বল সুদীপ দেব আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে চরম জনবিরোধী বিজেপি দলকে পরাজিত করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিজেপির শাসনকালে খাদ্য সামগ্রী সহ পেট্রোল, ডিজেল, রন্ধন গ্যাস, ওষুধপত্র সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশলচুম্বি মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে , অন্যদিকে গাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ পরিষেবার চাৰ্জ বৃদ্ধি, শিক্ষা , চিকিৎসা সহ সমস্ত ক্ষেত্ৰের ব্যয়ভার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে । দেশে এবং রাজ্যে বেকার সমস্যা তীব্রতর হয়েছে। সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাতো দূরের কথা কাছাড় কাগজকল সহ অসংখ্য কল কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি বন্ধ করা হচ্ছে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, রেল, ব্যাঙ্ক, বীমা সহ অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যাক্তিগত খণ্ডে তুলে দেওয়া হচ্ছে। দেশের নারীরা আজ অসুরক্ষিত। দেশে প্রতি মিনিটে নারী ধর্ষণ, হত্যার ঘটনা ঘটছে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত, শ্রমিকদের ন্যায়সংগত অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে। বেঁচে থাকার পথ না পেয়ে সাধারণ মানুষ আত্মহত্যা করেছেন, বহিঃরাজ্য গিয়ে বণ্ডেড লেবারের মতো কাজ করছেন। তথাকথিত উন্নয়নের সর্বাত্মক প্রচার চালিয়ে ও হিতাধিকারীর সৃষ্টিকে বিরাট করে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।
আজকে জনমতের তোয়াক্কা না করে করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের দুটা বিধানসভা কেন্দ্রকে ডিলিমিটেশনর নামে বিলুপ্ত করা হয়েছে। এমতাবস্থায় করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি সহ দেশের ছাত্র, যুব, শ্রমিক কৃষকরা তাদের নায্য অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে অবিরত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ কেন্দ্র সরকার এতে কর্ণপাত করছে না।
একদিকে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে জনগণকে বিভক্ত করার সঙ্গে মূল সমস্যাকে আড়াল করা হচ্ছে, অন্যদিকে ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ধ্বংস করতে দমনমূলক পন্থা অবলম্বন করছে। ফলে দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, আইনজীবী, বিজ্ঞানী, খেলোয়াড় সহ সচেতন নাগরিকেরা সর্ববস্থায় এই সরকারের পতন চাইছেন। তিনি জন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের দাবিতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে শক্তিশালী গণ আন্দোলন গড়ে তোলার স্বার্থে দলের তাঁকে জয়ী করতে আহ্বান জানান।