রমজানে কড়া ফরমান জারি সৌদির, আজানে ব্যবহার লাউডস্পিকার নয়, ইফতেহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা

১৩ মার্চ : ২২ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। তার আগেই পড় পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে বিশ্ব অন্যতম মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব। কারণ এই দেশেই রয়েছে মুসলমানদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র মক্কা আর মদিনা। সৌদি সরকারে নির্দেশ অনুযায়ী এবার রমজান মাসে আজান শোনা যাবে না। কোনও মসজিদ থেকে নামাজপাঠ বা প্রার্থনা সম্প্রচার করা যাবে না। এছাড়াও আরও একগুচ্ছ বিধিনিষেদ জারি করেছে সৌদি সরকার।

৩ মার্চ একটি বিবৃতি জারি করে এই কথা জানিয়েছে সৌদি সরকার। ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী শেখ আবদুললাতিফ বিন আবদুল আজিজ আর আলশেখ ১০ দফায় বিধিনিষেধের কথা জানিয়েছেন। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু রামজানে এই নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে দেশের বাসিন্দাদের। রামজানের নির্দেশিকাঃ

১. রমজান চলাকালীন মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানো যাবে না। কোনও প্রার্থনাই সম্প্রচার করা যাবে না। ইফতারও সম্প্রচার করতে পারবে না।

২. চাঁদা বা কোনও প্রকার অর্থ আদায় করা যাবে না।

৩. মসজিদের অন্দরে সূর্যাস্তের পর আর ইফতার পালন করা যাবে না। অর্থাৎ ইফতারের খাবার সন্ধ্যের পর খাওয়া যাবে না মসজিদের অন্দরে গিয়ে।

৪. প্রার্থনার জন্য স্বল্প সময়ের অনুমতি দেওয়া হবে।

৫. শিশুদের মসজিদের অন্দরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। যেকোনও মানুষের সমজিদে প্রবেশের জন্য সচিত্র পরিচয় পত্র প্রয়োজন।

৬. পূর্ণ সময়ের প্রার্থনা হবে মক্কা ও মদিনাতে। কিন্তু দেশের বাকি সমজিদে প্রার্থনার জন্য অল্প সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে কোনও প্রার্থনাই সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচার করা যাবে না।

৭. ক্যামেরা ব্যবহারের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কোনও ইমাম বা প্রার্থনারতদের ছবি তোলা যাবে না। মসজিদে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র ইমামের হাতেই দেওয়া হয়েছে।

৮. রমজানের যারা উপবাস করেন তাদের খাবার দেওয়ার জন্য চাঁদা বা অর্থ নেওয়া যাবে না।

৯. মসজিদে খাবার খেলে সেই ব্যক্তিকে সেই এলাকা পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

১০. মসজিদে কোনও তাঁবু তৈরি করা যাবে না। অস্থায়ী তাঁবু তৈরির অনুমতিও দেয়নি প্রশাসন।

সৌদি সংবাদ মাধ্যমেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আল সৌদিয়া জানিয়েছেন, দেশের সরকার রোজা রাখা বা ভাঙার ওপর কোনও নিয়ন্ত্রণ লাগু করেনি। কিন্তু মসজিদে যাতে রামজানের সময় দায়িত্বশীল মানুষ যাতায়াত করে তার জন্যই এই বিধিনিধিষ আরোপ করা হয়েছে। কারণ মসজিদের পরিচ্ছন্নতা ইসলামের অন্যতম শর্ত। তিনি আরও বলেছেন রমজানের সময় ফটোগ্রাফার আর সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের হাত থেকে মসজিদকে রক্ষা করার জন্য এই নিয়ম লাগু করা গহয়েছে।

তবে অনেকে মনে করছে এই নিময়ের মাধ্যমে রামজানের আনন্দকে কয়েদ করতে চাইছে সৌদি সরকার। কারণ এই পবিত্র সময় বিশ্বের বহু মানুষই এই দেশে যান। রমজান উদযাপন নিয়ে গোটা বিশ্বের চোখও থাকে সৌদির ওপর। কিন্তু কঠোর নিয়মকানুন লাগু করে উৎসবের আনন্দ থেকে সৌদি সরকার সাধারণ মানুষকে দূরে রাখতে চাইছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও কেউ কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Author

Spread the News