শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের লক্ষ্যে একের পর এক শিক্ষা নীতি : সৌরভ ঘোষ

বরাক তরঙ্গ, ২ জানুয়ারি : শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের লক্ষ্যে একের পর এক শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করছে সরকার। মঙ্গলবার করিমগঞ্জে ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও’র ৭০ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন সর্ব ভারতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৌরভ ঘোষ। এ দিন করিমগঞ্জের ডাকবাংলো রোডে বরাক উপত্যকা ভিত্তিক ছাত্র সমাবেশে মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঘোষ।

করিমগঞ্জে এআইডিএসও’র ৭০ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সমাবেশ_____

সংগঠনের অসম রাজ্য কমিটির সভাপতি প্ৰজ্জ্বোল দেবের সভাপতিত্বে সমাবেশে তিনি বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষার প্রাণসত্বা ধ্বংসকারী জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ সালে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যু দিবসে প্রণয়ন করে। যা বাতিলের দাবিতে গোটা দেশে শক্তিশালী ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এআইডিএসও’র ৭০ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, গোটা দেশে প্রায় আড়াই লক্ষ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ একত্রীকরণের নামে বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে। এই শিক্ষানীতি শিক্ষার ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক চরিত্রকেই শুধু ধ্বংস করছে তাই নয় কর্পোরেট গোষ্ঠীর মুনাফা লুটার স্বাৰ্থে শিক্ষার ব্যক্তিগতকরণ, বানিজ্যিকীকরণ ও সাম্প্রদায়িকীকরণ ঘটানোর নীল নক্সা স্বরূপ রচিত হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে দরিদ্র পরিবারের ছাত্ৰছাত্রীরা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে না।

শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের লক্ষ্যে একের পর এক শিক্ষা নীতি : সৌরভ ঘোষ

জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ শিক্ষা অর্জনের আসল উদ্দেশ্য চরিত্র গঠন, মনুষ্যত্ব অর্জনের পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে। এই শিক্ষানীতি কার্যত পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য পুস্তকহীন শিক্ষা প্রদানের সুপারিশ করেছে, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্ৰবৰ্তনের নামে ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞান অর্জনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে আটকে দেওয়া হয়েছে, নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সেমিস্টার প্ৰথা প্ৰবৰ্তন করে মেট্ৰিক পরীক্ষা তুলে দিয়ে ছয় মাস অন্তর অন্তর পরীক্ষা প্রদানের ব্যবস্থার প্রণয়ন আসলে দরিদ্র পরিবারের ছাত্ৰ-ছাত্রীদের শিক্ষাঙ্গন থেকে সরে যেতে বাধ্য করবে। ফলে দেশের সিংহভাগ শিশু আগামীতে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পাবে না।

শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের লক্ষ্যে একের পর এক শিক্ষা নীতি : সৌরভ ঘোষ

তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষা লাভের পথ রুদ্ধ করতে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সর্ব-ভারতীয় এন্ট্রান্স পরীক্ষা বাধ্যতামূলকভাবে চালু করা হয়েছে, ডিগ্রি কোর্স তিন বছরের পরিবর্তে চার বছরের করা হয়েছে, শিক্ষার স্বাধীকার কেড়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ইউজিসি, এমসিআই ইত্যাদি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান তুলে দেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তে শুধু সরকার মনোনীত আমলাদের শিক্ষার সিলেবাস তৈরি, গবেষণার বিষয় বস্তু নির্ধারণ ইত্যাদির দায়িত্ব অর্পণ করা হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের কর্পোরেটদের শাসন শোষণকে অক্ষত রাখার পরিপূরক সিলেবাস ও গবেষণার বিষয় ছাত্র ছাত্রীদের গ্রহণ করতে বাধ্য করবে। তিনি সবাইকে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানবতাকে রক্ষা করতে এআইডিএসও কে শক্তিশালী রূপে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন রাজ্য সম্পাদক হেমন্ত পেগু।

Author

Spread the News