দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ ডিসেম্বর : সম্মিলিত লোকমঞ্চের উদ্যোগে আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর শিলচরের চিলড্রেনস পার্ক মঞ্চে (নর্মাল স্কুলের কাছে) ‘ধামাইল নৃত্য প্রতিযোগিতা ২০২৫’ এবং ‘ধামাইল কন্যা প্রতিযোগিতা ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হবে। দু’দিনের এই সাংস্কৃতিক উৎসবের শিরোনাম ‘চলো, ধামাইলে একসঙ্গে পা ফেলি’। অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকবে ধামাইল আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের জন্য যথাক্রমে ৫,০০০ টাকা, ৩,০০০ টাকা ও ২,০০০ টাকা পুরস্কারমূল্য নির্ধারিত হয়েছে এবং বিজয়ীদের প্রশংসাপত্র প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টা থেকে।সোমবার শিলচরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের সম্পাদক ভাস্কর দাস জানান, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ধামাইল লোকনৃত্যের সংরক্ষণ ও প্রসার। তিনি বলেন, “ধামাইল তার ছন্দময় ভঙ্গি, সমবেত অংশগ্রহণ এবং সামাজিক বন্ধনের জন্য পরিচিত। পরিবেশনা ও ভিজ্যুয়াল নথিভুক্তির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে এই ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।” সংগঠন গত এগারো বছরেরও বেশি সময় ধরে লোকসঙ্গীত ও লোকসংস্কৃতির প্রসারে যুক্ত। প্রতি মাসে তারা ‘লোকোকণ্ঠ’ নামে অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ভাস্কর দাস আরও জানান, গত পাঁচ বছর ধরে এই প্রতিযোগিতা চালু এবং গত দুই বছর থেকে এটি বারাক ভ্যালি স্তরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগে এটি কাছাড় জেলা পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল।
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে সরকারের সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।”কার্যকরী সভাপতি মঙ্গল নাথ বলেন, “অনুষ্ঠানের প্রতি সাড়া অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী। দেশের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও উৎসাহজনক অংশগ্রহণ মিলছে, যার মধ্যে রয়েছে ম্যানচেস্টার, লন্ডন ও বাংলাদেশ।” সভাপতি ও কাছাড় কলেজের অধ্যক্ষ ড. অপ্রতিম নাগ সকলকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান। তিনি প্রতিক্রিয়া নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ব্যাপক জনসমাগম অনুষ্ঠানকে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দীপ চক্রবর্তী জানান, ইতিমধ্যে প্রায় ৪০টি নৃত্যদল যোগাযোগ করেছে। তিনি বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুরুচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য অধ্যাপক নিরঞ্জন রায় সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। মন্ত্রী কৌশিক রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে এবং অসম সরকারের সহযোগিতা পাওয়ার আশা করছি।
সংস্কৃতি সম্পাদক কণাইলাল দাস বলেন, “আমাদের দাবি, সরকারিভাবে ২৬ মে-কে ‘ধামাইল দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।” কার্যকরী সভাপতি গৌতম সিনহা, সহ-সংস্কৃতি সম্পাদক মনিমিতা গোস্বামী, সহ-সভাপতি রসরাজ দাস, শান্তনু রায়, কোষাধ্যক্ষ ঝিমলি নাথসহ অন্যান্যরা সকলকে উৎসবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। সংগীতপ্রেমী ও সাধারণ মানুষকে এই সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দিতে আয়োজকেরা আহ্বান জানিয়েছেন। এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক কানাইলাল দাস, কোষাধ্যক্ষ ঝিমলি নাথ, শান্তনু রায় গৌরী শংকর নাথ প্রমুখ।


