বরাক তরঙ্গ, ২০ নভেম্বর : বরাক উপত্যকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ন্যায্য অধিকার দাবিতে বৃহস্পতিবার কেঁপে উঠল জেলা সদর শিলচর। অল অসম আদিবাসী স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাছাড় জেলা শাখা ও বরাক ভ্যালি আদিবাসী সংঘের উদ্যোগে হাজারেরও বেশি আদিবাসী শ্রমিক ও ছাত্রসমাজের বিভিন্ন দাবিতে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে। এদিন বেলা এগারটায় নরসিংটোলার ময়দানে জমায়েত হয়ে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভ চলাকালীন এক প্রতিনিধি দল জেলা কমিশনারের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক স্মারকলিপি প্রদান করে।

সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সভাপতির দায়িত্বে থাকা দিলীপ পানিকা সাংবাদিকদের জানান, বরাকের চা শ্রমিক ও প্রাক্তন চা জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে অসমের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও শ্রমক্ষেত্রে অবদান রাখলেও এখনো তপশিলি জনজাতি মর্যাদা পাননি। অথচ বিহার, ঝাড়খণ্ড, ও পশ্চিমবঙ্গে একই সম্প্রদায় ইতোমধ্যে এই মর্যাদা ভোগ করছে। সুতরাং অসমেও অবিলম্বে তপশিলি মর্যাদা ঘোষণা করতে হবে।এছাড়া জমির মালিকানা না থাকায় শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংকটে পড়ছে—এ অভিযোগ তুলে সংগঠনগুলো প্রত্যেক শ্রমিক পরিবারের জন্য ভূমি পাট্টা প্রদানের জোর দাবি জানায়। পাশাপাশি দৈনিক মজুরি ২২৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫১ টাকা নির্ধারণ করা এবং বরাক-ব্রহ্মপুত্র দুটি উপত্যকার জন্য অভিন্ন মজুরি কাঠামো প্রণয়নের দাবিও তোলা হয়।দাবিগুলি দ্রুত পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

স্মারকলিপির প্রতিলিপি রাজ্য শ্রম দপ্তর ও কেন্দ্রীয় উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কেও প্রেরণ করা হয়েছে। আন্দোলনের এই কর্মসূচিকে ঘিরে শিলচরজুড়ে চা শ্রমিক সমাজের মধ্যে নতুন আগ্রহ ও প্রত্যাশা দেখা গেছে। সংগঠনগুলোর দাবি, এই আন্দোলনের লক্ষ্য অবৈষম্য দূর করে বরাকের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য একটি সম্মানজনক ও ন্যায্য জীবনধারা প্রতিষ্ঠা করা। আন্দোলন অংশ নেন প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিং সহ অনেকে।


