অ্যাঞ্জেল চাকমাকে হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি ও ন্যায়বিচারের দাবিতে কৈলাসহরে প্রতিবাদ কর্মসূচি

বরাক তরঙ্গ, ২৯ ডিসেম্বর : ত্রিপুরার ২৪ বছর বয়সি যুবক অ্যাঞ্জেল চাকমার মর্মান্তিক মৃত্যুতে রাজ্যজুড়ে শোক ও ক্ষোভের আবহ তৈরি হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে পড়াশোনা করতে গিয়ে নৃশংস হামলার শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারালেন অ্যাঞ্জেল। ১৮ দিনের জীবন-মৃত্যুর লড়াই শেষে শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়।

রবিবার অ্যাঞ্জেল চাকমার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে কৈলাসহর মহকুমার টিলাবাজার এলাকায় নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করে অ্যাঞ্জেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ইনসাফ পরিষদের সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন খান, শিক্ষক হোসাইন আহমেদ, সমাজকর্মী ও টিলাবাজার জামে মসজিদের ইমাম আব্বাস আলি আল-জালিলি, সমাজকর্মী নাঈম উদ্দিনসহ আরও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। বক্তারা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন। তাঁরা বলেন, অ্যাঞ্জেল চাকমার মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি নয়—এটি মানবতার পরাজয়। ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে এমন ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বক্তারা। তাঁদের স্পষ্ট বার্তা—ঘৃণা নয়, মানবিকতা; নীরবতা নয়, ন্যায়বিচার।

জানা গেছে, এক বছর ধরে দেরাদুনে পড়াশোনা করছিলেন অ্যাঞ্জেল চাকমা। ঘটনার দিন, ৯ ডিসেম্বর, অন্য দিনের মতোই তিনি তাঁর দাদা মাইকেলের সঙ্গে বাজারে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী তাঁদের ঘিরে ধরে জাতিগত বিদ্বেষমূলক কটূক্তি শুরু করে। অ্যাঞ্জেল ও তাঁর দাদা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে প্রতিবাদ জানালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রত্যক্ষ বর্ণনা অনুযায়ী, এক পর্যায়ে হামলাকারীরা লোহার বালা দিয়ে অ্যাঞ্জেলের দাদার ওপর আক্রমণ চালায়। দাদাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে অ্যাঞ্জেলের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রাণ রক্ষা করা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *