কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করা পদ্মশ্রী বিরুবালা প্রয়াত, শোক মুখ্যমন্ত্রীর

বরাক তরঙ্গ, ১৩ মে : ডাইনি হত্যা বা জাদুবিদ্যার মতো কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কাজ করা বিশিষ্ট সমাজকর্মী পদ্মশ্রী বিরুবালা রাভা আর নেই। সোমবার সকাল ৯-২৩ মিনিটে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জিএমসিএইচের স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কয়েকদিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। 

উল্লেখ্য, অন্ধবিশ্বাস, কালাজাদু ও ডাইনি সন্দেহে হত্যার বিরুদ্ধে বিরুবালা রাভার নিরলস সংগ্রাম জাতীয় স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ১৯৫৪ সালে অসমের গোয়ালপাড়া জেলার মেঘালয় সীমান্তবর্তী ঠাকুরভিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জীবনের প্রথমদিকে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে বিরুবালাকে। পরিবারিক দৈন্যতার দরুন অল্প বয়সে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। এত বাধা সত্ত্বেও তিনি একজন শক্তিশালী সমাজকর্মী হিসেবে আবির্ভূত হয়ে প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মানুষজনকে কুসংস্কারমুক্ত হতে নিরলস লড়াই করেছেন। গোয়ালপাড়া জেলার ঠাকুরভিলা গ্রামের এক কৃষকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

১৯৮৫ সালে গ্রামের এক হাতুড়ে বৈদ্য (তান্ত্রিক) কর্তৃক তাঁর ছেলের ভুল রোগ নির্ণয়ের সঙ্গে জড়িত বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা লাভ করেন তিনি। এর পর তিনি সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস দূর করতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। বছরের পর বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য বিরুবালা রাভা অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০০৫ সালে নর্থইস্ট নেটওয়ার্ক তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। এছাড়া ২০১৫ সালে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধি দেয়। ২০২১ সালে সামাজিক কাজে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদানকে স্বীকৃতি দেয় ভারত সরকার। ওই সালে বিরুবালা রাভাকে মর্যাদাপূর্ণ পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।

এ দিকে, তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক শোক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রয়াত বিরুবালা রাভার মৃত্যু সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। পদ্মশ্রী বিরুবালা রাভা, একজন সমাজ সংস্কারক যিনি সমাজ থেকে জাদুবিদ্যা নির্মূল করার জন্য অবিরাম কাজ করেছিলেন, অসমের সমাজের জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তার চির শান্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিরুবালা রাভার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

Author

Spread the News