বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শিলচরে

বরাক তরঙ্গ, ২৬ সেপ্টেম্বর : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৪ তম জন্মদিবসে এআইডিএসও’র আসাম রাজ্য কমিটির আহ্বানে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানবতা বিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ বাতিল ও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিরুদ্ধে শিলচরের রবীন্দ্র মুর্তির সামনে বিক্ষোভ প্ৰদৰ্শন করা হয় সংগঠনের জেলা কমিটির পক্ষ থেকে। বেলা সাড়ে এগারোটায় সংগঠনের কর্মী, সমর্থকেরা সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক চরিত্র ধ্বংস করা চলবে না, শিক্ষার ব্যবসায়ীকরণ ও ব্যাক্তিগতকরণ করা চলবে না, শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ ও গৈরিকীকরণ মানছি না, শিক্ষার কেন্দ্রীকরণ মানব না, ‘মার্জার ও ক্লোজার’- এর নামে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার চক্রান্ত বন্ধ কর, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাস ফেল প্ৰথা পুনরায় চালু কর, ছাত্র জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মেট্টিক পরীক্ষা তুলে দেওয়া চলবে না, প্রাথমিক শিক্ষাকে পরিকাঠামোহীন অঙ্গনবাদী কেন্দ্ৰে ঠেলে দেওয়া চলবে না, চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালুর পরিকল্পনা বাতিল কর ইত্যাদি স্লোগান দীর্ঘক্ষণ দিতে থাকে।

বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শিলচরে
আশ্রমরোডে পালনের এক মূহুর্ত।

সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌরচন্দ্র দাস, জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ পল্লব ভট্টাচার্য প্রমুখ সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ বাতিলের দাবিতে ও সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে গত ২০ সেপ্টেম্বর শহীদ কনকলতার আত্মবলিদান দিবস থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর নবজাগরণ আন্দোলনের মহান মনীষী ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস পর্যন্ত সারা রাজ্যে সপ্তাহব্যাপী প্ৰতিবাদ দিবস পালন করা হয়।

বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শিলচরে
বাগাটিলা ধোয়ারবন্দ।

তারা এও বলেন যে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে তৎপর হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্য নয় হাজার স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আরো এগারো হাজার স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা কম থাকার অজুহাতে রাজ্যের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার আসল কারণ অনুসন্ধান করে তা নিরসনে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা এও বলেন যে শিক্ষার ব্যবসায়ীকরণ ঘটিয়ে কর্পোরেটদের মুনাফা লুটার সুযোগ করে দিতেই জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ চালু করা হয়েছে। সেই শিক্ষানীতির অন্যতম ধারা মেনে ‘ক্লোজার ও মার্জার’ প্রক্রিয়ায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তাই শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের নীল নক্সা স্বরূপ তৈরি করা জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ বাতিলের আন্দোলন তীব্রতর করে তা বাতিলে সরকারকে বাধ্য করাতে না পারলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করা যাবে না। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ছাত্র ছাত্রীদের তারা ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শিলচরে
স্বামীজি রোডে।

এছাড়াও এদিন সংগঠনের পক্ষ থেকে আশ্রম রোড, দুধপাতিল, কনকপুর, ধোয়ারবন্দ, শ্রীকোনা, স্বামিজী রোড, রংপুর ইত্যাদি স্থানে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের ফটো বসিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সেগুলোতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী স্বাগতা ভট্টাচার্য সহ জেলা কমিটির সদস্য সদস্যারা।

Author

Spread the News