জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৮ ডিসেম্বর : গ্রামীণ উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, সাধারণ প্রশাসন, পর্যটন ও বিচার বিভাগীয় দপ্তরের মন্ত্রী রঞ্জিতকুমার দাস রবিবার কাছাড় জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে জেলা আয়ুক্তের কার্যালয়ের নব নির্মিত সম্মেলন কক্ষে এক বিস্তৃত পর্যালোচনা বৈঠক করেন। বৈঠকে শিলচর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, উধারবন্দ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম, ধলাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নীহার রঞ্জন দাস, কাছাড় জেলা পরিষদের সভাপতি কঙ্কননারায়ণ শিকদার সহ শীর্ষ কর্তৃপক্ষ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মন্ত্রী রঞ্জিতকুমার দাস জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট রোডম্যাপ তুলে ধরে নির্দেশ দেন যে আগামী ৬০ থেকে ৭৫ দিনের মধ্যে জেলার সকল উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়সীমা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে এবং প্রতিটি স্তরে অগ্রগতির ওপর কড়া নজর রাখা হবে। গ্রামীণ পরিবারের নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করার প্রতি সরকারের অঙ্গীকার তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, কাছাড় জেলায় প্রায় ১.৪৭ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই সরকারি স্কিমের আওতায় ঘর পেয়েছেন এবং আরও অনেকের ঘর নির্মাণের কাজ বর্তমানে চলছে। তিনি আরও জানান, এ উদ্দেশ্যে প্রায় ২৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা এই মিশনের ব্যাপকতা ও গুরুত্বকে তুলে ধরে।
পর্যালোচনার একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল প্রধানমন্ত্রী আওয়াস যোজনা (গ্রামীন), যার বাস্তবায়ন মিশন মোডে করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী দাস। তিনি প্রকল্প রূপায়ণের প্রতিটি স্তরে কঠোর নজরদারি, বিধায়ক, জেলা প্রশাসন এবং পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমে দ্রুত নির্মাণকাজ এগিয়ে নেওয়া এবং উপযুক্ত পরিবারের কাছে সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দেন।
স্বচ্ছতা ও প্রকল্প রূপায়ণে দায়বদ্ধতা মন্ত্রী দাসের নির্দেশনার কেন্দ্রবিন্দুতেও ছিল। সকল ব্লককে নিয়মিত অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয় এবং মনোনীত নজরদারি দলগুলোকে প্রতিটি পর্যায়ে ঘন ঘন পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে কাজের গুণমান এবং সময়সীমা কঠোরভাবে বজায় থাকে। মন্ত্রী দাস সব গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামসভা আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে “অন্যেষা অ্যাপ” সমীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত প্রকৃত উপভোক্তাদের যাচাই করা যায়। তিনি বলেন, এটি স্বচ্ছতা বাড়াতে, জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং উপভোক্তা তালিকায় অসামঞ্জস্য দূর করতে অত্যন্ত জরুরি।
বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরের দায়িত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী দাস সিইও, জেলা পরিষদ এবং সকল খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকদের কঠোর তত্ত্বাবধানে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ব্লক পর্যায়ে প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং পিআরআই সদস্যদের নজরদারি, সমন্বয় এবং গ্রামসভা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।


