ভাষা গবেষক আইনজীবী ইমাদ উদ্দিন বুলবুল আর নেই, জানাজা কাল
বরাক তরঙ্গ, ১০ জানুয়ারি : চলে গেলেন আইনজীবী ইমাদ উদ্দিন বুলবুল। শুক্রবার সন্ধ্যারাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথে রাত সাতটায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। শনিবার দুপুর ১-৩০ মিনিটে তাঁর প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে রংপুরের বাসভবনে। দ্বিতীয় জানাজা ও শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কাটিগড়ার নিজ গ্রামে।
জানা গেছে, শুক্রবার তিনি যথারীতি শিলচর বার লাইব্রেরিতে যান। বিকেল চারটা পর্যন্ত আদালতে কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে গিয়ে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে তাঁকে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ চিকিৎসার জন্য নিকটাত্মীয়রা ইটখোলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে রাস্তায়ই মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই পরিচিত মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
উল্লেখ্য, তিনি শুধু আইনজীবী নয় সুলেখক, ভাষা গবেষক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের অগ্রণী সংগঠক ছিলেন। প্রয়াত বুলবুল বদরপুরের দেওরাইল এমই মাদ্রাসা ও সিনিওর মাদ্রাসায় পড়াশুনার পর শিলচর কাছাড় কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে অর্থনীতিতে সাম্নানিক সহ স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৭৫ সালে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ওই বছরই সাংবাদিকতার ডিপ্লোমা পরীক্ষায় গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। তিনিই বরাক উপত্যকায় প্রথম ডিগ্রিধারী সাংবাদিক। বছর কয়েক সাংবাদিকতার পর ১৯৮৪ সালে আইনের স্নাতক ডিগ্রিও লাভ করে শিলচর বার অ্যাসোসিয়েশনে আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি শিলচর মহকুমা পরিষদে নির্বাচিত কাউন্সিলার ছিলেন। বুলবুল আইন পেশার সাথে লেখালেখি, সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সব সময় প্রথম সারিতে থাকতেন।
তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী মিনারা বেগম মজুমদার, দুই ছেলে ও এক মেয়ে সহ আত্মীস্বজন ও গুণগ্রাহী। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাহবাজ রাসেল খান দিল্লিতে কর্মরত প্রকৌশলী, দ্বিতীয় পুত্র ডাঃ শৈইন আলম খান, শ্রীভূমি জেলার শ্রীগৌরি হাসপাতালের চিকিৎসক ও একমাত্র কন্যা সোহেলি নাসিম খান কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক।