বরাক তরঙ্গ, ২৮ ডিসেম্বর : সংবিধান, সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের আহ্বান মিল্লি কাউন্সিল ত্রিপুরা ইউনিটের ১৫ বছর পূর্তির অভিযান শুরু।অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের ত্রিপুরা রাজ্য ইউনিটের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক মাসব্যাপী জাতীয় সংহতি ও সম্প্রীতি অভিযান কর্মসূচির শুভ সূচনা অনুষ্ঠিত হল। এই উপলক্ষ্যে এক তাৎপর্যপূর্ণ ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে যাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।শুক্রবার অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের ত্রিপুরা রাজ্য ইউনিটের কৈলাসহর কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংহতি ও সম্প্রীতি যাত্রার সূচনা করেন গৌহাটি হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রসিদ আহমদ চৌধুরী। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি জাতীয় সংহতি ও সামাজিক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বলেন বর্তমান সময়ে সংবিধানসম্মত অধিকার রক্ষা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিক দায়িত্ববোধকে আরও সুদৃঢ় করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
তিনি বলেন, ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের মাঝেও ঐক্য ও সহাবস্থানের চেতনাই ভারতীয় সমাজের মূল শক্তি। এই মহতী অভিযানের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানান।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের ত্রিপুরা রাজ্য ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট আইনজীবী কামাল এম মসদ্দর বলেন এই সংহতি ও সম্প্রীতি অভিযান শুধুমাত্র একটি সাংগঠনিক কর্মসূচি নয়, বরং এটি জাতীয় ঐক্য, সামাজিক সম্প্রীতি, মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সহাবস্থান এবং সাংবিধানিক চেতনার পক্ষে একটি সুসংগঠিত ও সময়োপযোগী আন্দোলন। তিনি অভিযানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে বলেন এই কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ ও পারস্পরিক সম্প্রীতি আরও দৃঢ় করা হবে। ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের মাঝেও জাতীয় ঐক্যের বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এই অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি গণসংযোগ ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।
কামাল এম মসদ্দর আরও জানান, এই অভিযানের মাধ্যমে কাউন্সিলের সদস্য নবীকরণ ও নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির কাজ করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিগত ১৫ বছর ধরে যাঁরা নিষ্ঠা, ত্যাগ ও আন্তরিকতার সঙ্গে সংগঠনের কাজে যুক্ত রয়েছেন তাঁদেরকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হবে এছাড়াও এই কর্মসূচির আওতায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সচেতনতামূলক সংলাপ, মানবিক ও সামাজিক কর্মসূচি, গুণীজন সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদানসহ একাধিক জনমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।এই সংহতি ও সম্প্রীতি অভিযানেরই অঙ্গ হিসেবে আগামী ১৮ জানুয়ারি বদরপুর আল জামিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য খতমে বুখারী এবং উত্তর-পূর্ব ভারত এমারাতে শরীয়াহ ও নাদওয়াতুত তামিরের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সভাপতি মওলানা আনিসুর রহমান কাসিমি। এই সম্মেলনে ত্রিপুরা রাজ্য ইউনিটের এক প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন, কাউন্সিলের সামগ্রিক কার্যক্রম তুলে ধরবেন এবং তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা প্রদান করবেন।
উল্লেখ্য, সংহতি ও সম্প্রীতি অভিযান যাত্রা কৈলাসহর থেকে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে সোনামুড়া (আগরতলা), সিপাহীজলা, ধর্মনগর, করিমগঞ্জ, বদরপুর ও হাইলাকান্দি হয়ে অগ্রসর হবে। এই দীর্ঘ অভিযানের সমাপ্তি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে হাইলাকান্দি জেলার রাঙাউটিতে। এই এক মাসব্যাপী অভিযান রাজ্য ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় সংহতি, সামাজিক সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের বার্তা ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা।


