ভাষা শহিদদের স্মৃতি তর্পণ ও স্মারক স্তম্ভের উদ্বোধন
পিএনসি, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১৯ মে : ১৯৬১ সালের বরাক উপত্যকার ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী এগারোজন বাঙালি শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ ১৯শে মে এক স্মরণসভা ও স্মৃতি তর্পণের আয়োজন করে বঙ্গবীর সংঘ। আজাদ হিন্দ রোডের মোড়ে নবনির্মিত ভাষা শহিদ স্মারক স্তম্ভের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে সূচনা হয় এই অনুষ্ঠানের।
নবরূপে নির্মিত এই স্মারক স্তম্ভের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক হারাণ দে। ভাষা শহিদদের স্মরণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি ১৯৬১ সালের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে গঠিত সরকারি কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ ও তার সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানান। পাশাপাশি বরাক উপত্যকায় সরকারি কাজে বাংলা ভাষার পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগের দাবিও তিনি উত্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে রামানুজ গুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রধান রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত বলেন, “১৯শে মে শুধুমাত্র একটি দিবস পালনের বিষয় নয়, এটি আমাদের নিত্যচর্চার এক অন্তর্নিহিত চেতনা হওয়া উচিত। নিজেদের জাগ্রত রাখার পাশাপাশি অন্যদেরও জাগাতে আমাদের সক্রিয় হতে হবে।”

রামানুজ বিদ্যা মন্দিরের অধ্যক্ষ দীপ্তিমান বিশ্বাস অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিলচর রেলওয়ে স্টেশনকে ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ হিসেবে নামাঙ্কিত করার দাবি তোলেন। বঙ্গবীর সংঘের সভাপতি বিমলেন্দু রায় ১৯শে মে-কে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সত্যব্রত চৌধুরী, অসীম ভট্টাচার্য, নবেন্দু দে, দেবজিত পাল সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি, যাঁরা ভাষা শহিদ দিবসের তাৎপর্য নিয়ে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন। ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে সভামঞ্চে একাধিকবার ‘বাংলা ভাষা’র জয়গান ও শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গোটা পরিবেশ।

বঙ্গবীর সংঘ ও আজাদ হিন্দ রোড উন্নয়ন কমিটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে শহিদদের স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন শিল্পী মৈত্রেয়ী দাশ ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ।