রেশন কার্ড বণ্টনে কংগ্রেসকে এক হাত নিলেন : কৃষ্ণেন্দু
মোহাম্মদ জনি, শ্রীভূমি।
বরাক তরঙ্গ, ১৫ ডিসেম্বর : পাথারকান্দিতে রেশন কার্ড বণ্টন অনুষ্ঠানে কংগ্রেসকে এক হাত নিলেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল। তিনি বলেন, এক সময়ে অর্থের বিনিময়ে অন্ন সুরক্ষা যোজনার কার্ড পেতেন আর আজকের দিনে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে প্ৰকৃত সুবিধাপ্রাপকের হাতে স্বেচ্ছায় রেশনকার্ড তুলে দেওয়া হচ্ছে। রবিবার মুণ্ডমালা খেলার মাঠে পাথারকান্দি বিধানসভা কেন্দ্রের রেশন কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল। তিনি এও বলেন, বিগত দিনে কংগ্রেসের আমলে বৃহত্তর বরাক উপত্যকার নাগরিকরা উন্নয়ণের পরিবর্তে পেয়েছেন শুধু লাঞ্ছনা আর বঞ্চনা। এই কংগ্রেস সরকার শুধু ভাষণবাজি আর নির্বাচন এলে প্যাকেজ ঘোষণার পাশাপাশি অপশাসনের রাজনীতি চালিয়ে গিয়েছিল বলে জোর গলায় বলেন, তার কথায় রেশন বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠ ব্যবস্থা বজায় রাখাই বর্তমান বিজেপি সরকারের মূল লক্ষ্য। যাতে প্ৰকৃত সুবিধাপ্রাপকরা এই সুবিধা থেকে একদিন উপকৃত হবেন এবং এটাই পরিবর্তনের সরকার বলে দাবি করেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল। বৃহত্তর বরাক উপত্যকার সার্বিক উন্নয়ণের কথা এর আগে কেউই ভাবে নি। ভেবেছেন একজনই যিনি রাজ্যের ডায়নামিক মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। আগে বরাকের উন্নয়ণ কোন গতিতে ছিল আর এখন সেই গতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিরোধীদের প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মন্ত্রী পালবাবু।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে এই বিজেপি সরকার রাজ্যের প্রায় ৪১ লক্ষের ও অধিক পরিবারকে খাদ্য সুরক্ষা যোজনার অধীনে নিয়ে আসার যে পদক্ষেপ নিয়েছিল সেটা এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ ছিল বলে জানান তিনি। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে এবার রাজ্যের প্রত্যেক জনগণকে এই যোজনার অধীনে নিয়ে আসার জন্য প্ৰচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এবার প্রথম পর্যায়ে গোটা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রীভূমি জেলার নিজ ভোট কেন্দ্র পাথারকান্দি বিধানসভার মোট ৩১১৭টি পরিবারের হাতে এই কার্ড তুলে দেওয়া হবে। এবং এ থেকে ১৮৬০১ জন হিতাধিকারী উপকৃত হবেন বলে মন্ত্রী এদিন জানান।
বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আমাকে মৎস্য, পশুপালন ও পূর্ত দফতরের মত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন। এতে আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করি। ‘জীবে প্রেম করে যেইজন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’ একসময় স্বামী বিবেকানন্দের এই উদ্ধৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে পশু পালন বিভাগের দায়িত্ব দেওয়ায় এবার মানুষের পাশাপাশি পশুদের ও সেবা চালিয়ে যাবার সৌভাগ্য হল আমার। কৃষ্ণেন্দু বলেন, হাতে আর সময় নেই, আগামী ২৬-এর পূর্বে নিজের দায়িত্ব যাতে যথাযত ভাবে পালন করতে পারি তারজন্য সমষ্টিবাসীর জনগণের সহযোগিতা ও আশীর্বাদ চান মন্ত্রী এদিন। এর আগে মন্ত্রী মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। পরে মঞ্চে একে একে অতিথিদের বরণ করা হয়। স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন শ্রীভূমি জেলার অতিরিক্ত জেলা কমিশনার আনিসুর রসুল মজুমদার।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাপ্লাই ইন্সপেক্টর রাজীব দাস, শিক্ষাবিদ শ্যামাপদ দে, প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য শান্তিলাল সিনহা, পাথারকান্দি ও লোয়ারপোয়া মণ্ডল সভাপতি যথাক্রমে শশীবাবু সিনহা, ঋষিকেশ নন্দী, পাথারকান্দি সমবায় সমিতির সচিব বিজয় বণিক, কলকলিঘাট সমবায় সমিতির সচিব পান্না গোপ, কানাইবাজার সমবায় সমিতির সচিব সুশান্ত সিনহা ছাড়া ও বিভিন্ন স্তরের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা সহ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলার ও সুবিধাপ্রাপক উপস্থিত থেকে এর সুবিধা গ্রহণ করেন। সবশেষে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।